দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জমে উঠছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন (কুসিক)। প্রচার-প্রচারণায় নিত্য কৌশল অবলম্বন করছেন প্রার্থীরা। তবে প্রচার-প্রচারণায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা এগিয়ে। অন্য প্রার্থীদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। অন্যদিকে সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষ কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতিপক্ষের প্রতি অভিযোগ ছুড়ে দিয়ে প্রচার-প্রচারণা করে যাচ্ছেন। রাত-দিন এক করে তারা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘুম ও খাওয়ার সময়ও পাচ্ছেন না। নগরীর ১, ২, ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গত দুবার কাউন্সিলর ছিলেন প্রার্থী কাউছারা বেগম সুমি। এবারো নির্বাচন করছেন তিনি। সুমি জানান, প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কারো প্রতি তেমন কোনো অভিযোগ নেই তার। তবে কারা যেন রাতেরবেলায় সাঁটানো পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলে দেন। শুক্রবার নগরীর রেসকোর্স কাঠেরপুল এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণা করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কাউছারা বেগম সুমি বলেন, ‘এখন প্রচার-প্রচারণার সময়। কখন খাওয়া-দাওয়া করি, কখন ঘুমাতে যাই তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নাই।’
এই ওয়ার্ডের আরেক প্রার্থী অ্যাড. আছিয়া মাহজাবিন খান নিশু বলেন, ‘আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিশ্বাসী। নির্বাচনে কেউ হারবে কেউ জিতবে। তবে আমরা চাই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন শেষ করতে।’ তবে এবার সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নতুন মুখ এসেছে অনেক।
তাদের মধ্যে সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৯, ২০, ২১-এর কাউন্সিলর প্রার্থী তাহমিনা আক্তার লিন্ডা। ঢাকার সাউথইস্ট ও লন্ডনের হার্ডাসফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করেছেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা রাজনীতিতে জড়িত। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়ে এবার কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। লিন্ডা বলেন, ‘আমি পারিবারিকভাবে দেখেছি, কীভাবে মানুষের সেবা করতে হয়। তাই এবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের কাছে যাই। সবাই আমাকে আপন করে নিচ্ছেন। এত রেসপন্স পাচ্ছি যা আমাকে অভিভূত করছে।’
একই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী উম্মে সালমা লিজা। তিনি সদ্য সাবেক কাউন্সিলর। উম্মে সালমা লিজা বলেন, ‘আগেরবার কাউন্সিলর ছিলাম। আমার এই এলাকার মানুষজনের কাছে আমি ওয়াদাবদ্ধ। তাই আবারো নির্বাচন করছি।’ ওই ওয়ার্ডে চারজন নারী প্রার্থী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে উম্মে সালমা লিজা ও তাহমিনা আক্তার প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে। হাতে লিফলেট, সঙ্গে বেশ কয়েকজন নারী। সবাই প্রচারণা চালাচ্ছেন। যাকে সামনে পাচ্ছেন লিফলেট দিয়ে দোয়া চাচ্ছেন। পাশাপাশি নির্বাচনের দিন ভোট দিতে অনুরোধ করছেন। তিনি বিজয়ী হলে ওয়ার্ডের সমস্যাগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে সমাধান করবেন।
এই কথাগুলো বলছিলেন নগরীর ১০, ১১, ১২ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী অনিতা সরকার। এই ওয়ার্ডে তিন নারী সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০১২ সালে এই ওয়ার্ডে অনিতা সরকার কাউন্সিলর হন। তারপর ২০১৭ সালে তাকে পরাজিত করেন রুমা আক্তার সাথী। এই দুজন ছাড়াও এবার তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন টিলটি সেন গুপ্তা।
ওই ওয়ার্ডের সাধারণ ভোটাররা এবার পড়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। কাকে ছেড়ে কাকে ভোট দেবেন। প্রচার-প্রচারণায় সবাই সমান। কুমিল্লা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মন্তব্য