সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাকিল মোরশেদ। বন্যার পানিতে তলিয়েছে ঘরবাড়ি। এখন তার চোখে মুখে শুধুই অন্ধকার।
অসহায় এই যুবল বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই আমার ঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। কিন্তু এখন আমার ঘরে হাঁটুর ওপরে পানি। এই অবস্থায় বউ-বাচ্চা নিয়ে কার শরণাপন্ন হব? নিরাপদ আশ্রয় নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
শুধু শাকিলই নন এরকম অবস্থায় সিলেটের লাখ লাখ মানুষ।
কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, আমার জীবনে আমি অনেক বন্যা দেখেছি। কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার কখনো হয়নি। পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে আতঙ্কিত না হয়ে উপায় নেই।
.jpg)
জৈন্তাপুর উপজেলার বাসিন্দা শাহিদ হাতেমী জানান, এই বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। একদিকে যেমন টানা বৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে পাহাড়ি ঢলে পুরো উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট নগরীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মানুষ।
এদিকে সিলেটের জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, লামাকাজী, বিশ্বনাথ এবং ওসমানীনগরসহ সবকটি এলাকায় পানিতে টইটুম্বুর করছে। অনেক জায়গায় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার বেশ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেইসঙ্গে সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, পিয়াইন নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়াতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য এসব এলাকার লাখো মানুষ আকুতি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনোয়ার সাদাত বলেন, বানভাসি মানুষকে উদ্ধার করা আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ। যেভাবে পানি বাড়ছে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। বন্যাকবলিত অঞ্চলে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করতে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর মানুষকে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।
মন্তব্য