এমন দুর্যোগ মুহুর্তে নেত্রকোনার বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা।
রোববার (১৯ জুন) সকাল থেকে জেলার হাওর উপজেলা খালিয়াজুরীর বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি মানুষের সেবায় কাজ করছেন সেনা সদস্যরা এবং নেত্রকোনা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) সদস্যরা সকাল থেকেই নৌকা নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও গ্রাম ঘুরে বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন।
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলাম সেনা ও বিজিবি সদস্যরা মাঠে নামার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ইউএনও বলেন, সেনাবাহিনীর পদাতিক ডিভিশনের ১৩০ সদস্যদের একটি দল রোববার সকাল থেকে খালিয়াজুরীর বন্যার্তদের সেবায় কাজ করছেন।
তিনি আরও বলেন, আমার কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন বন্যাদুর্গতদের আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অন্য কোথাও তেমন কোনো জায়গা নেই। সব স্থানেই পানি।
এদিকে রোববার সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিসের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বন্যার সার্বিক পরিসংখ্যান ও পরিস্থিতি তুলে ধরে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়।
এ সভার পর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ নেত্রকোনার ১০ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক এক পরিসংখ্যান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেন।
ওই পরিসংখ্যানের তথ্যমতে নেত্রকোনায় রোববার পর্যন্ত জেলার ১০ উপজেলার ৬২টি ইউনিয়ন বানের জলে প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৪ লাখ মানুষ। গৃহপালিত পশু, প্রতিবন্ধী, নারী-শিশু ও পুরুষসহ জেলার ৩২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যাদুর্গতদের জন্য সরকার ১৫৮ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২ হাজার ৪৫০টি শুকনো খাবার প্যাকেট বরাদ্দ দিয়েছেন। এরমধ্যে রোববার পর্যন্ত ৮৯ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৩ লাখ টাকা ও ১ হাজার ৩০০ প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে এবং বন্যাদুর্গতদের সেবা প্রদানের জন্য ৮৯টি মেটিকেল টিম গঠন এবং জরুরি সেবাদানের জন্য প্রতিটি উপজেলায় কট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
পরিসংখানে আরও উল্লেখ করা হয়- রোববার পর্যন্ত বন্যায় জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় ১ লাখ ৫৬ হাজার, কলমাকান্দা উপজেলায় ৫৮ হাজার ৪০০, মোহনগঞ্জ উপজেলায় ৫৭ হাজার ৫০০, বারহাট্টা উপজেলায় ৫৫ হাজার, খালিয়াজুরী উপজেলায় ৪০ হাজার ৫০০, আটপাড়া উপজেলায় ৮ হাজার, মদন উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০, নেত্রকোনা সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৯০০, পূর্বধলা উপজেলায় ৫ হাজার ৩৫০ এবং কেন্দুয়া উপজেলায় ৩২০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
মন্তব্য