কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ৩২ বছর আগের নির্মিত ব্রিজটি সংস্কারের অভাবে মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্ভোগ কমাতে উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ দপ্তর এগিয়ে এলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় এলজিইডি। এখন ব্রিজটির কাজ দুই দপ্তরের ফাঁদে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, যেকোনো সময় ব্রিজটি ভেঙে যেতে পারে। তাদের দাবি, দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণের।
জানা গেছে, উপজেলার বালাবাড়িহাট গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকার ব্রিজটি দীর্ঘদিন থেকে মরণফাঁদে পরিণত হয়ে আছে। লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি।
প্রায় ৩২ বছর আগে নির্মিত ব্রিজটির এখন বেহাল দশা। সরে গেছে দু’পাশের মাটি, ভেঙে গেছে রেলিং, বেরিয়ে এসেছে রড, দেবে গেছে সদ্য তৈরি গাইড ওয়াল ও পিচিং ব্লক। ব্রিজটি কয়েক বছর থেকে মরণফাঁদে পরিণত হলেও কোনো উদ্যোগ নেয়নি এলজিইডি বিভাগ।
দীর্ঘদিন পর হলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তত্ত্বাবধানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ওই স্থানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ করা হয়েছে।
ব্রিজটি নির্মাণের সব কার্যক্রম শেষে টেন্ডারের আগে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এলজিইডি। এলজিইডি থেকেই ঝুঁঁকিপূর্ণ ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ করা হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁঁকি নিয়েই চলাচল করছে।
স্থানীয় শহিদুল, বিপ্লবসহ অনেকে বলেন, আমরা তো ত্রাণ শাখা আর এলজিইডি বুঝি না। আমরা চাই নতুন ব্রিজ, চাই মরণফাঁদ থেকে বাঁচতে।
তারা আরো বলেন, ব্রিজটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। তবে স্থানীয়রা জানায়, এলজিইডির লোকজন খালি বলেই যাচ্ছে, কিন্তু কাজের কাজ তো হচ্ছে না। আর ত্রাণ শাখা করতে চাইলে এলজিইডি সেটিও করতে দিচ্ছে না।
অটোচালক আমজাদ বলেন, এই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করা বড়ই কঠিন, একটু এদিক সেদিক হলেও খালের নিচে চলে যাবে গাড়ি। পথচারীরা বলেন, দেশে এত উন্নয়ন হচ্ছে আর হামার ঝুঁঁকিপূর্ণ ব্রিজ মরণফাঁদের ওপর দিয়েই বছরের পর বছর যাতায়াত করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতি.) মো. সিরাজুদ্দৌলা বলেন, ‘উপজেলার বালাবাড়িহাট গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় একটি নতুন ব্রিজের জন্য আমাদের সব কার্যক্রম শেষে টেন্ডার আহ্বানের আগেই এলজিইডির বাধার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।’
দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ করা হবে জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সড়কে আমরা ব্রিজ করব, এখানে ত্রাণ শাখার তো দায়িত্ব নয়।’এ ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য