-->

মৌলভীবাজারে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, প্লাবিত নতুন নতুন এলাকা

পুলক পুরকায়স্থ, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, প্লাবিত নতুন নতুন এলাকা

মৌলভীবাজারে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে মনু ও ধলাই নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

গত ৪ দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মনু ও ধলাই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১.৫ থেকে ২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ৭ উপজেলার ৫০ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে প্রায় দুই লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির রয়েছে সঙ্কট।

শহরের মনু নদের চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও শহরবাসীদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে। নতুন করে জেলা শহরের মাইজপাড়া এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪১ টি ঘরের ত্রিশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে মনুনদের চাঁদনীঘাট পয়েন্টে সকালে বিপদসীমার ১.৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সোমবার (২০ জুন) দুপুরে শহরের মাইজপাড়া এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ত্রিশ পরিবারের নারী শিশুরা পার্শবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন।

'কাল সন্ধ্যা থেকে চুলা বন্ধ। খাবার কিনে খাচ্ছি। এখনো কোন সহায়তা পাইনি।'- বলেন আশ্রয়কেন্দ্রে আসা রীমা বেগম।

শাকিল আহমদ জানান, পানি বাড়ছে। এখানকার কয়েক পরিবারের নারী শিশুরা পার্শবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও আত্নীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পুরুষেরা এখনো আছেন বাঁধের উপর।

জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় জেলায় প্রায় ৫০টি ইউনিয়নের ৩২৫ গ্রামের প্রায় দুই লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১৫ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। ৬০টি মেডিকেল টিম বন্যা উপদ্রুত এলাকায় কর্মরত রয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব মালাকার।

ভারীবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এছাড়াও বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার নতুন করে আরও ৮০টি গ্রাম বানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্ধ আছে অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, জেলার বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আমরা সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। বন্যা কবলিতদের সাহায্যার্থে বরাদ্দ দেওয়া চাল ও শুকনা খাবার এরই মধ্যে উপজেলা দপ্তরের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছে গেছে।

মন্তব্য

Beta version