-->

বরগুনা হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ রোগী

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ রোগী

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দিন দিনই বেড়েই চলেছে। চিকিৎসকের কক্ষের দরজায় লেখা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কোনো ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির দেখা করা নিষেধ। এ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছেন না কেউ। রোগীরা বের হলেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে চলে টানাহেঁচড়া। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন তারা।

 

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে পপুলার ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের ইনফরমেশন অফিসার মামুন ও তন্ময় নিজেদের কোম্পানির কার্ড ঝুলিয়েই রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে তাদের ওষুধ লেখানোর জন্য ডাক্তারদের কাছে উৎকোচ নিয়ে যান। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীর চাপ আগের চেয়ে কিছুটা বেশি। বহির্বিভাগের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগে সবচেয়ে বেশি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দেখা যায়। তারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলছিলেন। চেম্বারের বাইরে রোগীদের অপেক্ষায় থাকার জন্য বসার জায়গার বেশিরভাগ স্থান তারা দখলে নিয়েছেন।

 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে এ বিষয়ে একটি অফিস আদেশ ঝোলানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ডাক্তাররা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির সাক্ষাৎ গ্রহণ করবেন না। অতএব সব পর্যায়ে কর্মরত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সকাল থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অবস্থান না করার জন্য বলা হলো।

 

এ বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী রোগী নূপুর বেগম বলেন, ডাক্তার দেখাতে এসে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি। এর মধ্যে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকজন ডাক্তারের রুমে এসে অনেক সময় নষ্ট করেন। এতে আমরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।

 

ভুক্তভোগী জাহিদ হাওলাদার বলেন, অনেকে প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে আমাদের রোগ সম্পর্কে জেনে যান এবং আমাদের ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেন। আমরা তাদের আমাদের প্রেসক্রিপশন দেখাতে চাই না, তবুও বারবার ছবি তোলার জন্য অনুরোধ করে।

 

বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া) বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি মহাসিন খান বলেন, বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে টাইম নির্ধারণ করে দিয়েছি ডাক্তার ভিজিট করার জন্য। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ২টা ৩০ মিনিটের পরিবর্তে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টার পরে সাক্ষাতের অনুমতি আনা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কোনো কোম্পানির লোক ডাক্তারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

২৫০ শয্যা বরগুনা জেনারেল হাসপাতালো তত্ত¡াবধায়ক ডা. মো. সোহরাব উদ্দীন বলেন, ওরা (ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি) ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ভিড় করেন, জটলা করেন, এতে সমস্যা হয়। আমার সমস্যার কথা আমি চিঠিতে লিখে দিয়েছি। এখন যা করার ডিসি সাহেব করবেন।

 

ভোরের আকাশ/নি

মন্তব্য

Beta version