-->
শিরোনাম

ফুলবাড়ীতে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, খুশি আলুচাষিরা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
ফুলবাড়ীতে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, খুশি আলুচাষিরা
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পাঠকপাড়া এলাকার আলু ক্ষেত থেকে আলু তুলছেন নারী কৃষিশ্রমিক

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জমি থেকে আগাম আলু তোলার হিড়িক পড়েছে। আর বাজারে এ নতুন আলুর বেশি দাম পেয়ে খুশি এখানকার আলুচাষিরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এখন ভিড় জমিয়েছেন ফুলবাড়ী উপজেলায়।

 

স্থানীয় সূত্রমতে, কৃষির ওপর নির্ভরশীল ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রায় দুই যুগ থেকে আগাম আলু চাষ করা হচ্ছে। এখানকার চাষিরা আগাম বিভিন্ন জাতের আলুর আবাদ করে নিজেদের সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এখানকার উৎপাদিত আগাম জাতের আলু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের চাহিদা মেটাচ্ছে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, ফুলবাড়ী পৌর এলাকার পাইকারি ও খুচরা সবজি বাজারে প্রচুর চাহিদা এবং দাম বেশি থাকায় এ উপজেলায় আগেভাগে উঁচু সমতল জমিতে চাষিদের লাগানো আগাম জাতের আলু তোলার হিড়িক পড়েছে। আলু তোলা নিয়ে কৃষক-কিষাণীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেত থেকে আলু তুলে বস্তায় ভরছেন। এ সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা মাঠ থাকা সেই বস্তাভর্তি আলু কিনে নিয়ে পিকআপ ভ্যান কিংবা ট্রাকে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।

 

উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ এলাকার আলুচাষি পলাশ হোসেন জানান, এ বছর তিনি তিন বিঘা জমিতে রোমান ক্যারেট জাতের আলু চাষ করেছেন। এতে হালচাষ, বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ও কৃষিশ্রমিকদের মজুরিসহ খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এ জমি থেকে তিনি পেয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কেজি আলু। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকার আলু বিক্রি হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে দুই লাখ টাকা লাভ হয়েছে। বেশি দাম পাওয়ার আশায় আগাম জাতের আমন ধান কাটামাড়াই করেই এ জমিতে আগাম আলু চাষ করেছিলেন তিনি।

 

একই এলাকার আলু চাষি রতন আলী ৮ বিঘা, মানিক হোসেন দেড় বিঘা ও গোলজার হোসেন দেড় বিঘা জমিতে রোমান ক্যারেট জাতের আগাম আলু চাষ করে আশানুরূপ লাভের মুখ দেখছেন।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে। ফলন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৩ দশমিক ৮৩ টন। এতে মোট উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৫২০ টন। চলতি বছর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।

 

এ দিকে মাঠেই আলুর চড়া দাম পেয়ে কৃষক পরিবারে সমৃদ্ধি বয়ে আনছে। প্রতি বছর এ উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক আমন ধান ঘরে তুলে আগাম বাজার পেতে আলুর চাষ করেন। বর্তমানে সেই ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আগাম আলু। আগাম আলু চাষে এলাকার কৃষকরা লাভবান হওয়ায় আগামীতে আগাম আলু ব্যাপক জমিতে চাষাবাদ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version