-->

কালকিনি উপজেলা মুক্ত দিবস আজ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
কালকিনি উপজেলা মুক্ত দিবস আজ

আজ ৮ ডিসেম্বর মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কালকিনি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে কালকিনি ত্যাগ করে পালিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা।

 

মুক্তিযুদ্ধের সময় ভ‚রঘাটার পাশে একটি ব্রিজের কাছে মানুষ ধরে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার পর নদীতে ফেলে দিত পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা। ব্রিজের নিচে পানিতে মানুষের লাল রক্তে রঞ্জিত হওয়ায় পরে এই ব্রিজের নাম হয় লাল পোল বা লাল ব্রিজ। যা এখনো মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত।

 

জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লুটতরাজ, অগ্নি সংযোগ, নারী নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। গ্রামের পর গ্রাম পুড়ে তামা করে দেয় হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা।

 

১৭ অক্টোবর পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর কর্তৃক কালকিনি থানার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ফাঁসিয়াতলা হাটসহ এলাকার বহু স্থানে অসংখ্য মানুষকে নৃসংশভাবে হত্যা করে এবং ঘরবাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে। বিজয়ের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা হত্যাযজ্ঞের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধারাও দেশ মাতৃকাকে শত্রæমুক্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।

 

১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে তৎকালীন কালকিনি থানার ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কালকিনির সিডিখান, এনায়েতনগর, সমিতিরহাট ছাড়াও পাশর্^বর্তী বরিশালের গৌরনদী ও মুলাদী থানা এবং কালকিনির সীমান্তবর্তী তিনটি স্থানে মুখোমুখি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকবাহিনীকে পরাস্ত করেন। পরে ৮ ডিসেম্বর কালকিনি থানা মুক্ত হয়।

 

তবে ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও আটকে পরা পাকবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ২২ দিন যুদ্ধ হয় বরিশালের গৌরনদীর এলাকায়। সেখানেও অংশগ্রহণ করে মাদারীপুরের কালকিনির মুক্তিযোদ্ধারা।

 

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সদ্য সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. জলিল আকন বলেন, কালকিনির বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র ফাঁসিয়াতলা হাটসহ এলাকার বহু স্থানে অসংখ্য মানুষকে পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদররা নৃসংশভাবে হত্যা করে। ভ‚রঘাটার পাশে একটি ব্রিজের কাছে মানুষ ধরে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিত পাকবাহিনী।

 

ব্রিজের নিচে পানিতে মানুষের লাল রক্তে রঞ্জিত হওয়ায় পরে এই ব্রিজের নাম হয় লাল পোল বা লাল ব্রিজ। বিজয়ের মাস ঘনিয়ে আসায় মুক্তিযোদ্ধাদের মারমুখী যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে ৭ ডিসেম্বর রাতে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী এবং ৮ ডিসেম্বর কালকিনি থানা হানাদারমুক্ত হয়।

 

দিনটি যথাযথভাবে পালন করে আসছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। লাল ব্রিজ এলাকায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার ও দিবসটি সরকারিভাবে পালনের দাবি জানান তিনি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version