-->

ব্লাক রাইস চাষে সফল সারোয়ার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ব্লাক রাইস চাষে সফল সারোয়ার
ধানক্ষেতে ধান কাটছেন সারোয়ার

ফরিদপুরে পরীক্ষামূলকভাবে ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ‘ব্লাক রাইস’ চাষ করে আশানুরূপ ফল পেয়েছেন সারোয়ার ব্যাপারী (৩৬)। ফরিদপুর পৌরসভার উত্তর শোভারামপুর ব্যাপারী পাড়ায় ফসিল মাঠে ১০ শতাংশ ক্ষেতে তিনি এ ধান চাষ করেন।

 

রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারোয়ার ধানক্ষেতে একজন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটছেন। ব্লাক রাইস এর ঔষধি গুণই তাকে এ ধান চাষে বেশ আগ্রহী করে তুলেছে বলে জানান তিনি।

 

সারোয়ার ফরিদপুর শহরের কৃষি কলেজ এলাকার গিয়াসউদ্দিনের কাছ থেকে এ ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তা ও সহযোগিতায় দশ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছেন। এখন ক্ষেত থেকে ৬-৭ মণ ধান পাওয়ার আশা করছেন।

 

ব্লাক রাইস পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও বাজারে দাম বেশি হওয়ায় দিন দিন কালো ধানের আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন চাষিরা। যা এই এলাকায় ‘কালো ধান’ নামে পরিচিত।

 

সারোয়ার ব্যাপারী বলেন, গত জুলাই মাসের শেষের দিকে এ ধানের বীজ জমিতে রোপণ করি। ২ হাজার টাকা কেজি দরে ব্লাক রাইস ধানের বীজ সংগ্রহ করি। ধান সংগ্রহ করার পর প্রথমে বীজতলা তৈরি করি। সেখানে একটি একটি করে ধান বপন করে চারা তৈরি করতে বীজতলা করি। প্রায় প্রতিটা ধান থেকে অঙ্কুর বের হয়। ২ সপ্তাহ পর বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ করে দশ শতাংশ জমিতে বø্যাক রাইস ধানের চারা রোপণ করেছিলাম। ৬-৭ মণ ধান পাওয়া যাবে আশা করি। চারা রোপণের ৯০ দিনের মধ্যেই ধান ঘরে তোলা যায়। অন্যান্য ধানের তুলনায় রোগবালাইও কম।

 

তিনি বলেন, এর গাছ অন্যান্য ধান গাছের মতো সবুজাভ। তবে ধানের রংটা কালো হওয়ায় একে আলাদা করা সম্ভব হয়। ব্লাক রাইস চালটা একটু মোটা হয়। তবে স্বাস্থ্য সচেতনদের কাছে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

 

কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, সারোয়ারের ব্লাক রাইস ধানের ক্ষেতের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে খেয়াল রেখেছি। ওই ক্ষেতে আগে কিছু পোকার আক্রমণ হয়েছিল। তা ওষুধ প্রয়োগে ঠিক হয়ে গেছে। এ ধান আমন মৌসুমে এবং একই উপায়ে রোপণ করা হয়ে থাকে। বিঘাপ্রতি ফলন হয় ১৮ থেকে ২০ মণ।

 

তিনি বলেন, এই এলাকায় এ ধান নতুন। কিন্তু ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ হওয়ায় এ ধান চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছি। কৃষকদের আগ্রহ থাকলে এ ধানের বীজ এ অঞ্চল ও আশপাশের অঞ্চলের কৃষককে সরবরাহ করব। এর ফলে কৃষক কম দামে এ ধান সংগ্রহ করতে পারবে। এ ধানের চালের ভাত খেলে অনেক রোগ কমে যায়।

 

তিনি আরো বলেন, সাধারণ ধানের চেয়ে কালো ধানের দাম ও চাহিদা অনেক বেশি। কালো ধানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগপ্রতিরাধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে রাখে সুস্থ। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, চোখের রোগ প্রতিরোধ, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধে এই ধানের চাল ভ‚মিকা রাখে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version