তলোয়ার হাতে ঘোড়াগাড়িতে চেপে রাজার বেশে বিয়ের বধূকে আনতে বরযাত্রী নিয়ে যান দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরএলাকার কাঁটাবাড়ী গ্রামের রাফিউল আরাফাত হিমেল।
নিজের বিয়েকে স্মরণীয় করতেই এই আয়োজন বলে জানান রাফিউল আরাফাত। শুধু ঘোড়াগাড়ি-ই নয়, বরযাত্রী বহনে ছিল না ইঞ্জিন চালিত কোনো যান। বর গেলেন কনের বাড়িতে ঘোড়াগাড়িতে চেপে আর বরযাত্রীরা গেলেন রিকশায়। প্রায় দেড় শতাধিক রিকশা ছিল বরযাত্রী বহনে।
গত শুক্রবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনে সাদিয়া শারমিনকে নিয়ে ঘোড়াগাড়ীতে নিজ বাড়িতে ফিরেন বর রাফিউল আরাফাত। ঘোড়াগাড়ীতে বরযাত্রা দেখতে রাস্তায় জমে উৎসুক মানুষের ভিড়।
বর রাফিউল আরাফাত হিমেল পৌরএলাকার কাঁটাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পৌর মেয়র মুরতুজা সরকার মানিকের বড় ছেলে এবং কনে সাদিয়া শারমিন পূর্ব কাঁটাবাড়ী গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছোট মেয়ে।
বরের মা শাহনাজ পারভীন পপি জানান, আগে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ছিলো ঘোড়ার গাড়িতে করে বিয়ে করতে শশুর বাড়ি যাবে বর। কিন্তু কালের পরিবর্তনে তা বিলিন হয়ে গেছে। তবে আমার ছেলের বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতে ঘোড়ার গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ি পাঠানো হয়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আবার ঘোড়াগাড়িতেই নববধূকে আনা হয়।
তিনি আরো জানান, তার মতো সবাই যদি বিয়েতে এমন আয়োজন করে তাহলে বিলুপ্ত হওয়া গ্রামীণ ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে। বিয়েতে আসা ফুলবাড়ী পৌর এলাকার বাসিন্দা ও কনের বন্ধু আমিনুল ইসলা, রাজিন শ্রেয়াস রুমান ও শিহাব জানান, আমাদের বান্ধবীর বিয়েতে প্রাচীন ঐতিহ্য তুলে ধরতেই এই আয়োজন করেন বরপক্ষ। যারা বিয়ে করেনি তারা এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করে তাদের বিয়ে স্মরণ করেন রাখলে গ্রামীণ ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে।
স্বপ্নপুরী থেকে আসা ঘোড়ার গাড়ির কোচোয়ান বলেন, ঘোড়ার গাড়ি দেশের পুরাতন ঐতিহ্য, এক সময় বিয়েতে ঘোড়াগাড়ি ব্যবহার হতো, এখন আর হয় না। এখন মাইক্রোসহ বিভিন্ন যানে বিয়ের যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হয়। আগে আমরা এই ঘোড়ার গাড়িতে করে বউ আনতাম-নিতাম, এখন আর বিয়েতে কেউ ঘোড়ার গাড়ি নেন’না। এই বিয়েটি উপলক্ষে বরপক্ষ আমার ঘোড়াগাড়ি ভাড়া করেছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য