-->
শিরোনাম

ফকির রফিকুলের শীতকালীন তরমুজ চাষ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ফকির রফিকুলের শীতকালীন তরমুজ চাষ
ছবিতে তরমুজ চাষী ফকির রফিকুল ইসলাম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে শীতকালীন তরমুজের চাষ হচ্ছে। গরমকালে তরমুজের আকাশচুম্বী চাহিদার কথা কে না জানে। গরমের তরমুজ এখন শীতকালেও মিলে। গ্রীষ্মের কাঠফাটা গরমের এই তরমুজ সহজেই মাঘের কনকনে ঠান্ডায় পাওয়া যায়; ভাবা যায়! বাংলাদেশে শীতকালে তরমুজ পাওয়ার কথা চিন্তাই করা যেতো না।

 

সময়ের ব্যবধানে আমাদের দেশে তরমুজ এখন বারোমাস চাষ হয়। ব্যাপকভাবে না হলেও স্বল্প পরিসরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারাবছর সুস্বাদু তরমুজের চাষ হচ্ছে। দিন দিন আবাদের পরিমাণ বাড়ছে। মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ একটি সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী এলাকার চাষী ফকির মো. রফিকুল ইসলাম প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে সুইট ব্ল্যাক ২ জাতের তরমুজ চাষ করেছে। দুই মাস আগে বারোমাসি তরমুজের বীজ রোপণ করে সে। দূর থেকে দেখলে যে কেও মিষ্টিকুমড়া ভেবে ভুল করে বসবে।

 

অধিকাংশের ওজন এখন ৩ কেজির মতো। একটু বড় হলে নরম ডগা যেন ওজনের ভারে ছিঁড়ে না যায় এজন্য নেট ব্যাগ দিয়ে তরমুজগুলোকে বেঁধে রাখা হয়। মাটি থেকে অল্প উঁচুতে মাচার তরমুজের সাথে দুলছে কৃষক রফিকুলের স্বপ্ন। অসময়ের ফলনে ভালো দাম পাবার আশা তার। চাষী ফকির মো. রফিকুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, 'আগে আমি অন্য ফসলের লগে নিয়মিত টমেটো চাষ করতাম। এই বছর নজরুল ভাই (উপসহকারী কৃষি অফিসার) এর পরামর্শে তরমুজ লাগাইলাম। ফলন বালা অই অইছে'।

 

তিনি আরো জানান, প্রতি বিঘায় ৪০-৪৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে তরমুজ পাইকারি ৩০-৩৫ টাকা কেজি দর আছে। সপ্তাহখানেক পর থেকে প্রথম চালান বিক্রি করতে পারবে। ফলন ভালো হয়েছে; এবার বাজারের দর ঠিক থাকলে খরচের দ্বিগুণ বা এরচেয়ে অধিক মুনাফা লাভের আশা করছেন তিনি।

 

মো. নজরুল ইসলাম সপ্তাহে একবার সরেজমিনে এসে দেখে যান। রোগবালাই, পোকামাকড় দমনে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন। একবার সেড তৈরি করলে বছরে নূন্যতম ৩ বার চাষ করা যায়। পরের ২ বার নির্মাণ খরচ হয়না বলে উৎপাদন খরচ কমে গিয়ে লাভের পরিমাণ বেশি হয়।

 

বিজয়নগর উপজেলা কৃষি অফিসার শাব্বির আহমেদ বলেন, 'উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। বুধন্তী, হরষপুর, পাহাড়পুর, চান্দুরা ইউনিয়নের কিছু কিছু জায়গায় তরমুজের চাষাবাদ হচ্ছে। অন্য ফসলের পাশাপাশি বারোমাসি তরমুজের আবাদ বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অধিকমাত্রায় তৎপর। যারা আবাদ করতে চায় আমরা তাদেরকে সহায়তা করব'। চারা এবং বীজ উভয় মাধ্যমে এই বারোমাসি তরমুজের চাষ করা যায়।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version