-->

রামপালে ১২৮ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬৯ পদে শিক্ষক নেই

মো. কামরুজ্জামান, বাগেরহাট প্রতিনিধি
রামপালে ১২৮ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬৯ পদে শিক্ষক নেই

মো. কামরুজ্জামান, বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ মোট ১৬৯টি পদ খালি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টিতে প্রধান শিক্ষক, ৬৫টিতে সহকারী শিক্ষক ও প্রাক-প্রাথমিকের সৃজনকৃত ৬৭টি পদের বিপরীতে এই পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে আছে। এ ছাড়াও সুমা রানী পাল নামের এক সহকারী শিক্ষিকা অননুমোদিতভাবে (ছুটি ছাড়া) গত ২০১৮ সালের ৪ জুলাই থেকে থেকে নিরুদ্দেশ রয়েছেন।

 

রামপাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, অবসরজনিত কারণে ৩৬ জন প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে আছে। প্রতি মাসেই দুয়েকজন শিক্ষক অবসর নিচ্ছেন। এ ছাড়াও কয়েকজন শিক্ষক অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুবরণও করেছেন।

 

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মোট ৪৯টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের শূন্য পদের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দপ্তরে চালাচালি হলেও দীর্ঘ ৮-১০ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা হচ্ছে না। শতকরা ৬৫ ভাগ প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের বিপরীতে পদোন্নতি দেয়ার কথা থাকলেও সেটি ঝুলে আছে। এ ছাড়াও সরাসরি শতকরা ৩৫ ভাগ সহকারী শিক্ষককে নিয়োগ দানের বিষয়টিও ঝুলে আছে দীর্ঘদিন।

 

উপজেলার প্রাক-প্রাথমিকে ৬৭টি পদ সৃজন করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ প্রদান করা হয়নি। এ উপজেলায় ৬৭টি বেসরকারি রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হলেও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকের কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে বদলি হওয়া কিছু শিক্ষক প্রাক-প্রাথমিকের শিশুদের পাঠদান করে আসছেন।

 

অন্য বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দ্বারা পাঠদান করানো হচ্ছে। সরকারের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা একটি শুভ উদ্যোগ। এটা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শুধু প্রাকের উপযোগী শিক্ষক না থাকায়।

 

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন শেখ বলেন, শিশুদের পাঠদান বা মানসিক বিকাশ শুরু হয় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা থেকে। এটাকে যুগোপযোগী করতে হলে অবশ্যই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক দিতে হবে প্রাক-প্রাথমিকে।

 

এ ছাড়াও অনেক প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগ বন্ধ থাকায় সহকারী শিক্ষকদের শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। এতে শিক্ষার মানে ত্রæটি থেকেই যাচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানের দাবি করেন এই নেতা।

 

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, নতুন করে সরকার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। সব শূন্য পদের বিপরীতে জনবল চেয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রাক-প্রাথমিকের শূন্য পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ খুবই জরুরি।

 

কারণ এখন থেকে মূলত শিশুদের মেধা বিকাশ শুরু হয়। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি। এ জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version