জাহাঙ্গীর আলম, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে তীব্র শীত অনুভ‚ত না হলেও আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ভিড় বাড়ছে শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতে। বিত্তবানরা অভিজাত শপিংমল ও বিপণিবিতানে ছুটলেও নি¤œ এবং মধ্যবিত্তদের অনেকেই ফুটপাতের দোকানগুলোর দ্বারস্থ হচ্ছেন। শিশু ও বৃদ্ধদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে বেশি।
শহরের গাঙ্গিনাপাড়, চড়পাড়া ও নতুন বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাত ও মার্কেটগুলোতে সোয়েটার, উলের পোশাক, বেøজার, ট্রাউজার, জ্যাকেট, চাদর, মাফলার, কানটুপিসহ নানা ধরনের শীতবস্ত্রের বিপুল সমারোহ। পছন্দমতো দামে গরম কাপড় কিনছেন ক্রেতারা। শীতের শুরুতেই বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বিক্রেতারা।
গাঙ্গিনাপাড় এলাকায় বারী প্লাজা শপিংমলের ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ বলেন, এখনো তীব্র শীত পড়েনি। তবুও গত এক সপ্তাহ ধরে নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন শীতের পোশাক কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে বেশি। শীত বাড়লে গতবারের চেয়ে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।
একই এলাকার বাসাবাড়ি মার্কেটের মনোয়ার স্টোরের মালিক জালাল মিয়া বলেন, এ মার্কেটে নারীদের কাপড় বিক্রির ধুম চলে সারা বছর। তবে শীত এলেই বিভিন্ন দোকানে নারী-পুরুষের পুরোনো ও নতুন শীতের কাপড় বিক্রি বেড়ে যায়। ক্রেতাদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে শীতের কাপড় উঠিয়েছি। এবার মনে হচ্ছে বিক্রিও ভালো হবে।
বাসাবাড়ি মার্কেটের পাশের ফুটপাতের ব্যবসায়ী মনোয়ার মিয়া জানান, নিন্ম ও মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজনের ভরসা এসব দোকান। তার দোকানে ২০ থেকে ৭০০ টাকা দামের শীতের কাপড় রয়েছে। তবে এক থেকে দুইশ টাকার পোশাক বেশি বিক্রি হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কম দামে পছন্দের পোশাক কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। আশানুরূপ লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও।
নতুন বাজার এলাকায় মফিজ উদ্দিন ইনডেক্স প্লাজার দ্বিতীয় তলায় কাপড়ের ব্যবসা করেন জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, সারাবছর অন্য কাপড় বিক্রি করলেও এ মৌসুমে শুধু শীতের কাপড়ই বিক্রি করি। এখনো আশানুরূপ বিক্রি শুরু হয়নি। অনেক ক্রেতা এসে পছন্দের কাপড় কিনলেও অনেকে দেখে চলে যাচ্ছেন। শীত কিছুটা বাড়লে বিক্রি আরো বাড়বে।
দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে ফরহাদ মিয়া নামের এক ক্রেতা বলেন, অনেক দোকানে গত কয়েক বছর আগের শীতের কাপড় এবারের নতুন কালেকশন বলে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া শপিংমলগুলোতে গত বছরের চেয়ে দামও অনেক বেশি। ফলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের লোকজন ছুটছেন নতুন কিংবা পুরোনো শীতের কাপড়ের বিভিন্ন দোকানে। ফুটপাতের নতুন কাপড়ের দোকানেও ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।
সাদ্দাম হোসেন নামের আরেকজন বলেন, গত বছর গাঙ্গিনাপাড়ের বারী প্লাজা শপিংমল থেকে আমার এক ছেলের জন্য জ্যাকেট কিনেছিলাম এক হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে। একই জ্যাকেট এবার আরেক ছেলের জন্য কিনতে এলে দুই হাজার ৮০০ টাকার কমে দিচ্ছে না। শীতের শুরুতেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। এতে ক্রেতারা ঠকলেও বিক্রেতাদের পকেট ভারি হচ্ছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে প্রতিদিনই নবজাতক ও শিশু রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। এদের বেশির ভাগ সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাস কষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত। ফলে শীতের এ সময়ে শিশুদের গরম কাপড় পরালে শীত থেকে রক্ষা পাবে। এতে ঠান্ডাজনিত রোগও আক্রমণ করতে পারবে না।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য