মৃত দাদিকে দেখতে গিয়ে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীর বাহিরডাঙ্গা ঘাটে নৌকা ডুবে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত হামিদপুর ইউনিয়নের একজন গ্রামপুলিশসহ ৪ জন নিখোঁজ আছেন।
এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন-বাহিরডাঙ্গা গ্রামের ইনামুল মন্ডলের মেয়ে নাজমা (২৫) ও তার ৩ বছরের শিশুপুত্র নাসিম। বাবার বাড়ির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নবগঙ্গা নদীর ওপারে পারবাহিরডাঙ্গা গ্রামে মৃত দাদীকে দেখতে যাচ্ছিলেন তারা। মৃত নাজমা হামিদপুর ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের স্ত্রী।
ছোট নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রীবহনের জন্য এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা। দুর্ঘটনায় ৯ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। তাদের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা চলছে। নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন-হামিদপুর ইউনিয়নের গ্রামপুলিশ লাবু শেখ, রয়েল মন্ডল, মাহমুদ শেখ ও খানজা শেখ। এরা ইনামুল মন্ডলের আত্মীয়-স্বজন। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ছোট নৌকায় ইনামুল মন্ডল পরিবারের অন্তত ১৫ জন সদস্য নদী পারাপারের সময় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে নৌকা ডুবে যায়। এ সময় ৯ জন সাঁতরে উপরে উঠতে পারলেও ৬জন নিখোঁজ হয়। দুর্ঘটনার পর দুইজনের মরদেহ উদ্ধার হলেও অন্যরা নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, স্ত্রী নাজমা ও শিশুপুত্র নাসিমকে হারিয়ে বাবরুদ্ধ হয়েছেন বাবা আব্দুল জলিল। পরিবারের ১৫ সদস্যের সঙ্গে মৃত দাদি শাশুড়িকে দেখতে নৌকা পার হচ্ছিলেন আব্দুল জলিল। চোখের সামনেই ছেলে ও স্ত্রী নদীতে ডুবে মারা গেলেও তিনি তাদের জীবিত উদ্ধার করতে পারেনি। সেই আপসোসই বারবার জলিলকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। শোকে কাতর হয়ে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। ঠিকমত কথা বলতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি; মাঝিসহ নৌকায় ১৫জন মানুষ ছিলেন। নৌকাডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম) প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এছাড়া মৃত মা ও ছেলের দাফনের জন্য ২১ হাজার টাকা করে সহযোগিতা করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য