-->

বাম্পার ফলনেও লোকসানের শঙ্কায় কৃষক

জহুরুল ইসলাম হালিম, রাজবাড়ী
বাম্পার ফলনেও লোকসানের শঙ্কায় কৃষক
রাজবাড়ীতে পেঁয়াজের মাঠে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণী। ছবিটি শুক্রবার তোলা

জহুরুল ইসলাম হালিম, রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে এ বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। শ্রমিকের মজুরি বেশি, কীটনাশকসহ সব উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের তুলনায় পেঁয়াজ আবাদে খরচ হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কিছুটা ক্ষতি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে। এসব কারণে লোকসানের আশঙ্কা করছেন রাজবাড়ী জেলার কৃষকরা। কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত বছর ৩৪ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হলেও এ বছর জেলায় ৩৫ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে এ বছর পাঁচ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দাবি, পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে।

 

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। শ্রমিক, বীজ ও সারসহ বিঘা প্রতি তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করায় কমেছে পেঁয়াজের দাম। যদি পেঁয়াজ আমদানি করে সরকার তাহলে লোকসানে পরবে বলে জানান তিনি।

 

হরিণবাড়িয়া এলাকার কৃষক আলমাস ফকির জানান, পেঁয়াজ চাষে এ বছর দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়েছে। এখন বাজারে ২০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। এ জন্য এ এলাকার প্রায় কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এভাবে বাজার থাকলে আগামীতে আর কেউ পেঁয়াজের আবাদ করবে না। পেঁয়াজ বাদ দিয়ে অন্য ফসল আবাদে ঝুঁকবেন তারা।

 

কৃষক রুপন প্রামাণিক বলেন, রাজবাড়ীতে প্রচুর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এ বছরও মাঠের পর মাঠ পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারলে লাভবান হবেন কৃষক। এর কমে বাজারে বিক্রি হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রতিটি কৃষককে। আবার কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে না যাওয়া ও প্রণোদনার সঠিক বণ্টন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

 

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান বলেন, পুরো খানগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষিপণ্যের সমাহার হয়। হরিহরপুর মাঠ থেকে কৃষক যাতে সহজে উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে পারে সেজন্য হরিণবাড়িয়া খালের ওপর চারটি কালভার্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা ছাড়া ওই সড়কটিও মেরামতের কাজ চলমান।

 

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম শহিদ নূর আকবর বলেন, পেঁয়াজের উন্নতমানের জাত নিয়ে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এ বছর ৬৭৫ জন কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে সার-বীজ প্রদান করা হয়েছে। তা ছাড়াও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকদের খোঁজখবর রাখছেন। ফসলের রোগজীবাণু সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/মি/আসা

মন্তব্য

Beta version