-->
শিরোনাম

রাঙ্গুনিয়ায় মায়ের সামনে ছেলেকে গুলি করে হত্যা

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
রাঙ্গুনিয়ায় মায়ের সামনে ছেলেকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া সরফভাটায় বেপরোয়া সন্ত্রাসী গ্রুপের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ধারালো ছুরির আঘাতে আহত হয়েছে স্থানীয় আরো ছয়জন। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সরফভাটা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছৈয়দুরখীল এজাহার মিয়া সওদাগরের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মো. মোজাহেদ (২৮) একই এলাকার মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয় তার। সে প্রবাস থেকে এসে এলাকায় দিনমজুরের কাজ করত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

নিহত মোজাহেদ ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান। মাত্র ৭ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন। ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগেও গাছ কাটা শ্রমিক হিসেবে কাজ শেষে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন। এলাকার প্রতিটি ঘরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় আহত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন একই এলাকার মৃত কেরামত আলীর ছেলে আবু তাহের (৩৫), বাদশা মিয়ার ছেলে মো. ফয়জুল্লাহ (২৫), মো. ইব্রাহীমের ছেলে মো. ফরহাদ (১৯), আবদূর রশিদের ছেলে মো. জামাল (২৫) এবং খায়ের আহমদের ছেলে জালাল উদ্দিন (৩০)। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোনাফ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া তথ্যমতে, গুলিবিদ্ধ মোজাহেদের বড় ভাইয়ের সঙ্গে পূর্বের বিরোধ ছিল সন্ত্রাসী বাহিনীর। এরই জের ধরে সন্ধ্যার পর ৩০-৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় প্রবেশ করে। তবে প্রবেশের আগেই তারা এলাকার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দেয়।

 

তারা প্রথমে এসে মায়ের সামনে ছেলে মোজাহেদকে গুলি করে। এর আগে দোকানে ঢুকে সবার মুঠোফোন চেক করতে করতে হারুনের ছেলে কে বলে বলে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি ছুরি চালাতে থাকে তারা। এ সময় স্থানীয় আরো ছয়জন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়। সন্ত্রাসীরা প্রায় ১০ রাউন্ড গুলি চালায় তখন।

 

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক আবদুল মান্নান বলেন, আহতদের একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের কারো হাত, কারো পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রের আঘাত। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে। 

 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যারা গুলি করে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তারা সবাই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। হত্যাকান্ড, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত তারা। যেটুকু জানতে পেরেছি, পূর্ব শত্রুতার জেরে মোজাহেদকে খুন করেছে সন্ত্রাসীরা। তবে পুলিশ ক্যাম্প ও দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ায় থানা স্থাপন হলেও সন্ত্রাসীদের দাপট থামাতে পারছে না কেউ। সন্ত্রাসীদের এলাকা থেকে উচ্ছেদ করতে প্রশাসনের প্রতি আহব্বান জানান চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মো. মাহাবুব মিলকী বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই হয়তো তার মৃত্যু হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে আছি। সন্ত্রাসীরা ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version