ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন সৈয়দপুর, জবুথবু জনজীবন

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন সৈয়দপুর, জবুথবু জনজীবন
ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে সৈয়দপুর। ছবিটি মঙ্গলবার সকালে তোলা

আবারো ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে সৈয়দপুরসহ উত্তরাঞ্চল। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এখানে তাপমাত্রা ছিল ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে নীলফামারী জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

 

কুয়াশার আধিক্যের কারণে সামান্য দূরত্বে দেখা না যাওয়ায় শহরের ভেতরেও দুপুর পর্যন্ত লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। মহাসড়কে ধীর গতিতে চলছে বাস-ট্রাক। শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উঠানামায়। ট্রেনগুলোতেও ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা বিলম্বের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

 

শৈত্যপ্রবাহ প্রবল না হলেও কনকনে ঠান্ডা বিরাজ করায় তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। খুবই জরুরি না হলে বাইরে বের হচ্ছে না লোকজন। কিন্তু রিকশা, ভ্যান চালকসহ দিনমজুর শ্রেণির কর্মজীবী মানুষেরা বাধ্য হয়ে কর্মে যোগ দেয়া নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন।

 

সবচেয়ে দুরবস্থায় রয়েছে ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী। রেলওয়ে স্টেসন, বাস টার্মিনাল ও পথে প্রান্তরে বসবাসকারী এসব মানুষ টিকে থাকার প্রাণপণ লড়াই করছে। নি¤œ আয়ের মানুষেরা অনেকটা কর্মহীন অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। একদিকে আয় না হওয়ায় খাদ্যাভাবে না খেয়ে কাটাতে হচ্ছে। অন্যদিকে গরম কাপড় না পেয়ে কষ্ট পোহাচ্ছে।

 

এদিকে গরম কাপড়ের বাজারে ক্রেতা সমাগম হলেও অন্যান্য পণ্যের দোকানে বিক্রিতে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। তবে চায়ের দোকানগুলোয় ভিড় বেড়েছে। সেইসঙ্গে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে ও ওষুধের দোকানেও জন উপস্থিতি বেড়েছে। শীত নিবারণে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নেয়ার প্রচেষ্টাও চলছে।

 

গত কয়েকদিন ধরে ১০ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে তাপমাত্রা। গতকাল মঙ্গলবার তা আরো কমে ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে সর্দিজ্বর, কাশি, শ^াসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ। প্রতিদিন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ কোল্ড ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছে।

 

কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকেরা। রাতদিন শিশিরে ভিজে নষ্ট হতে বসেছে চারা। অনেকে সকালে চারার শিশির ঝরাতে মই চালান, ছাই ছিটানোসহ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছেন। আলু ক্ষেতেও দেখা দিয়েছে পাতা মোড়ানো, গোড়াপচাসহ নানা সমস্যা। এ কারণে বারবার ওষুধ ছিটিয়েও রেহাই মিলছে না। এভাবে কুয়াশা পড়া অব্যাহত থাকলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

 

দুপুরে সূর্যের মুখ সামান্য দেখা গেলেও রোদে তাপ না থাকায় বিকেল ৩টার পর থেকে আবারো ঠান্ডার প্রভাব প্রকট হচ্ছে। এতে দিনেরাতে প্রায় ২০ ঘণ্টাই শীত বিরাজ করছে। ফলে সব মিলিয়ে মাঘের শীতে কুপোকাত হয়ে পড়েছে সৈয়দপুর তথা নীলফামারী জেলাসহ উত্তরাঞ্চলের জনপদ।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য