অজয় ঘোষ, রাজশাহী ব্যুরো: দেড় দশক ধরে বিচিত্র সব আকার আর অবয়বের বাঁশের লাঠি তৈরি করে চলেছেন রাজশাহীর রফিকুল ইসলাম। এসব লাঠিতে ফুটিয়ে তুলছেন শৈল্পিক নকঁশা। বাঁশের শেকড় থেকে শুরু করে কান্ড সবকিছু কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। রাজশাহীর পঞ্চান্ন বছর বয়সী রফিকুল ইসলামের হাতের জাদু মানুষকে মুগ্ধ করে তুলছে।
তার বাড়িতে ঢোকার পরে দূরে থেকে দেখলে মনে হবে মুরগি বুঝি ডিমে তা দিচ্ছে। আবার যেন ফনা তোলা সাপ, পাখি, শেয়াল, বেজী, কুমিরসহ অনেক কিছু শুধু বাঁশের লাঠি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পেশায় তিনি মোজায়েদ মিস্ত্রি হলেও লাঠির কাজে তিনি পান নির্মল আনন্দ।
রফিকুলের লাঠি দেখতে আসছেন এলাকার মানুষ। তার এমন সুন্দর কারু কাজে দেখে মুগ্ধ তারা। এলাকার কামরুল জানান, পাখি, সাপ, কাঁক সবকিছুই আছে এখানে, আর এলাকায় যে এত সুন্দর একটা মানুষ আছে এটা দেখতে আমাদের ভালো লাগে। এতো সুন্দর লাঠি গুলো বানিয়েছে।
রফিকুলের ছেলে সাহেব আলী বলেন, আমি ছোট থেকে দেখছি আমার বাবা এই লাঠিগুলো নিজের হাতে কষ্ট করে তৈরি করছে। বাবার জিনিস নষ্ট তো করা যাবে না। তাই আজীবন আগলে রাখতে হবে। অনেক মানুষ এগুলো দেখতে আমাদের বাড়িতে প্রতিদিন ভীড় জমায় তা দেখে খুব ভালো লাগে।
রফিকুল ইসলাম জানান, নানার লাঠি দেখেছিলাম ছোট বেলায়। তখন থেকে আমার শখ আমি লাঠি তৈরি করবো। তারপর যখন পলি বাবার মাজারে বেড়াতে যাই তখন ঐখানে দেখি একজন লোকের হাতে। তখন থেকে আমার পুরা নেশা হয়ে গেল যে আমি এমন লাঠি তৈরি করে নিয়ে ঘুড়ে বেড়াবো। তখন একটা লাঠি বানাতে বানাতে বহু লাঠি হয়ে গেছে। যত লাঠি তৈরি করি তত মজা লাগে।
লাঠি তৈরির জন্য মাটি থেকে বাঁশের গোড়া তুলতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে। পুরো কাজ শেষ করতে সময় লাগে পাঁচ থেকে সাত দিন। এখন পর্যন্ত তিনি মোট ১শত ৭২টি লাঠি তৈরি করেছেন। অনেকে কিনতে চাইলেও লাঠিগুলো নিজের কাছে রেখে দেন রফিকুল। এই লাঠিগুলো তৈরিতে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে লাঠির জাদুঘর তৈরি করার ইচ্ছে আছে রফিকুলের।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য