নিশান আহমেদ, নড়াইল: নড়াইলের চাকই-রুখালী এলাকায় ৩৬৬তম ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী মেলাও বসেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পালাগানের মধ্য দিয়ে এ মেলা শেষ হয়েছে। গান পরিবেশন করেন-কুষ্টিয়ার নজরুল ইসলাম বয়াতী ও নাটোরের মায়া রানী সরকারসহ স্থানীয় শিল্পীরা। এ উপলক্ষে চাকই-রুখালীসহ আশেপাশের ১০ গ্রামের মানুষের মিলনমেলার সৃষ্টি হয়। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন আসেন।
চাকই গ্রামের রাসেল হুসাইন, জুয়েল রানা, আব্বাস বিশ্বাস, ইতি রানী, শুকরান বেগমসহ এলাকাবাসী জানান, পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়নের চাকই-রুখালী এলাকায় ৩৬৬তম ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বংশ পরম্পরায় ঐতিহ্যবাহী এ ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এ উপলক্ষে আশপাশের ১০ গ্রামের মিলনমেলায় হাজারো মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবারের ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দুদিনব্যাপী মেলায় নাগরদোলা, হরেক রকম মিষ্টি, পিঠাসহ ঐহিত্যবাহী খাবার ও খেলনার দোকান বসে। বিছালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুকের উদ্যোগে ঘোড়াদৌড় ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে ঘোড়ার মালিকসহ সোয়ারিরা জানান, একেকটি ঘোড়া লালন-পালনসহ পরিচর্যা খরচ অনেক হলেও মানুষকে বিনোদন দিতে গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন তারা। স্বাগতিক নড়াইলসহ যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও কিশোরগঞ্জের ৩৩টি ঘোড়া অংশগ্রহণ করে।
প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে-সাতক্ষীরার তালা এলাকার মফিজুল মেম্বারের ঘোড়া, দ্বিতীয় যশোরের অভয়নগর উপজেলার মরিচা গ্রামের নিসার ফকিরের ঘোড়া, তৃতীয় অভয়নগরের হিদিয়া গ্রামের মরিয়ামের ঘোড়া, চতুর্থ কিশোরগঞ্জের সুজন মিয়ার ঘোড়া এবং পঞ্চম অভয়নগরের পুড়াখালী গ্রামের হাজি ওসমানের ঘোড়া। প্রথম বিজয়ীকে ২০ হাজার, দ্বিতীয় ১৫ হাজার, তৃতীয় ১০ হাজার, চতুর্থ সাত হাজার এবং পঞ্চম পুরষ্কার পাঁচ হাজার টাকা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন চক্রবর্তী, বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক, মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রেজাউল করিম, স্থানীয় তবিবার রহমান বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা এম এম সোহেল রানা, লাবলু শেখ, হালিম বিশ্বাস প্রমুখ।
এ ব্যাপারে বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক বলেন, এলাকার মানুষের মাঝে সম্প্রীতি ও মেলবন্ধন বজায় রাখতে ঘোড়াদৌড়সহ দু’দিনব্যাপী পৌষমেলার আয়োজন করা হয়েছে। ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এ ধরণের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে চাই। এ আয়োজনে প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী অনেক সহযোগিতা করেছেন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য