-->
শিরোনাম

চরফ্যাশনে তরমুজ আবাদে ব্যস্ত কৃষক

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
চরফ্যাশনে তরমুজ আবাদে ব্যস্ত কৃষক
ভোলার চরফ্যাশনের গ্রামাঞ্চলে তরমুজ আবাদে মাঠ প্রস্তুত করছেন কৃষক

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় গ্রামাঞ্চলে তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষক পরিবারের ঘরে বসে নেই কেউ, নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজে নেমে পড়েছেন। গত বছর তরমুজের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা তরমুজ চাষে বেশী আগ্রহী হচ্ছেন। কিন্তু সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম বেশী থাকায় দিশেহারা কৃষক।

 

সরেজমিনে উপজেলার শশীভূষণ, নজরুল নগরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে আমন ধান কাটা শেষ হতে না হতে মাঠে শুরু হয়েছে তরমুজ লাগানোর প্রস্তুতি। বার বার চাষ দিয়ে দ্রুত মাটি শুকিয়ে রোপন করা হয় তরমুজের বীজ। কৃষকরা মনে করেন আগে লাগালে আগে তরমুজ পাওয়া যায় এবং ভালো দামে বিক্রি করা যায়, এ ধারনা থেকেই উপজেলার কৃষি জমিতে ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে তরমুজের চাষ।

 

ইতোমধ্যে জমি চাষাবাদ করে বীজ রোপনের পর চারা বড় হয়ে গেছে। এখন তরমুজ চারার পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। এ কাজ করতে ঘরের নারী ও শিশুরাও বসে নেই। তারাও পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছে। সবাই মিলে সারাদিন শ্রম দিচ্ছে তরমুজ ক্ষেতে।

 

বীজ ও কীটনাশকের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। দাম বেশি থাকায় কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ৫০ কেজির এক বস্তা টিএসপি সার এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। সরকারিভাবে ৫০ কেজির এক বস্তা টিএসপি সারের দাম এক হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু তরমুজ চাষে কৃষকেরা বেশি আগ্রহী হওয়ায় সুযোগে সার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট গড়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছে এমন অভিযোগ কৃষকদের।

 

অপর দিকে বাজারে এক কৌটা (১০০ গ্রাম) বিগ ফ্যামিলি ৩০০০ টাকা, জাগুয়া ৩২০০ টাকা ও এশিয়ান বীজ ৩১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর একই বীজের দাম ছিল ২৫০০-২৭০০ টাকা। পাশাপাশি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জমি চাষেও বেশি খরচ হচ্ছে। এর ফলে এবার তরমুজের উৎপাদন খরচ বাড়বে বলে জানান তারা।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৮২৭ হেক্টরেরও বেশি জমিতে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

 

উপজেলায় বেলে-দোআঁশ মাটিতে ড্রাগন ও ড্রাগনসুপার তরমুজ ভালো চাষ হয়। যা তরমুজ চাষের জন্য খুবই উপযোগি। এই উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নই কমবেশি তরমুজ চাষ হয়। তার মধ্যে মুজিব নগর, নজরুল নগর ও নিলকমল ইউনিয়নে তরমুজের চাষ বেশি এবং ফলন ভালো হয়।

 

উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের তরমুজ চাষী সিরাজুল ইসলাম ও কাশেম বলেন, গত বছর তরমুজ চাষে ভালো লাভবান হওয়ায় এ বছর (আগের চেয়ে বেশি) তিন একর জমিতে তরমুজের চাষ শুরু করেছি। বীজ ও সারের দাম অনেক বেশি থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ বেশি হবে।

 

চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো ওমর ফারুক বলেন, এ উপজেলায় তরমুজের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকরা তরমুজ চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। এ বছর তরমুজের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৭শ ২৭ হেক্টরেরও বেশি। তবে তরমুজ গাছে পোঁকামাকড় ও কোনো ধরণের সমস্যা হলে তরমুজ চাষীরা অব্যহিত করলে সঠিক ও সুন্দর পরামর্শ দেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি

মন্তব্য

Beta version