-->

১১ গ্রামের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

আ. রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল
১১ গ্রামের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ১১ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী

আ. রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ১১ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়নে মুজাহাটি ও বাগুনডালি খেয়াঘাটে ঝিনাই নদীর পূর্ব ও পঞ্চিম তীরের ১১ গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকোটি। একটি সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তারা।

 

সরেজমিন জানা যায়, ঝিনাই নদীর পঞ্চিম তীরে বাগুনডালি, মাইজবাড়ী, ভদ্রবাড়ী, মিলকুড়িয়া, তেরবাড়ীয়া ও পূর্ব পাশে কুরমুশি, মুজাহাটি, সাইটাপাড়া, আড়ালিয়া, নাটশালা, কালিয়া গ্রামসহ আশপাশের এলাকার মানুষ হামিদপুর-বাগুনডালি সড়কটি ব্যবহার করে থাকেন। বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র বাহন থাকে নৌকা। এ ছাড়া সারা বছরই একটি অংশে নৌকা ছাড়া পারাপার হওয়া যায় না।

 

স্থানীয়রা জানায়, হামিদপুর-বাগুনডালি সড়কে মুজাহাটি ও বাগুনডালি খেয়াঘাটটি মূলত সম্ভুর খেয়াঘাট হিসেবে সমধিক পরিচিত। ওই ঘাটে সেতুর অভাবে স্কুল, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে পারাপারের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। দেরিতে পারাপারের কারণে অনেক সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সম্ভুর খেয়াঘাটে সেতু না থাকায় এতদাঞ্চলের মানুষদের অন্তত তিন কিলোমিটার এলাকা ঘুরে গন্তব্যে যেতে হয়। ওই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার কর্মমুখী মানুষ, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন গ্রীষ্ম ও বর্ষাসহ সব মৌসুমে চলাচল করে থাকে। সম্ভুর ঘাটে দ্রæত সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

 

এদিকে, মাটি খেকোরা নদীর আশপাশ এবং ফসলি জমি থেকে ড্রেজার ও ভেকু (খননযন্ত্র) দিয়ে মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করছে। ফলে ঝিনাই নদীতীরের রাস্তাটিতে ধুলো-বালিতে চলাচল করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে নদীতীরের বাড়িগুলোতে বসবাস করাও ঝুঁঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

 

মাইজবাড়ী বাগুনডালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান জানান, বর্ষা মৌসুমে শিশুদের স্কুলে আসা-যাওয়া করতে খুবই অসুবিধা হয়। এ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিতি একেবারেই কমে যায়। এখানে সেতু নির্মাণ হলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। এ অঞ্চলের মানুষের চলাফেরায় সুবিধা হবে। তিনি ওই স্থানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান।

 

দিঘলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মটু জানান, কৃষিপ্রধান এলাকা হওয়ায় পণ্য পরিবহনে কৃষকরা মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হন। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বাড়লে ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতে খুবই অসুবিধা হয়। এ সময় নৌকার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।

 

তিনি জানান, এখানে সেতু নির্মাণের জন্য তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে একাধিকবার আবেদন করেছেন। শেষ পর্যন্ত সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি শুনেছেন।

 

ঘাটাইল উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) আশরাফ হোসেন জানান, ওই স্থানে সেতু নির্মাণে স্টাডি হয়েছে ও সেতু নির্মাণের জন্য ডিজাইন হচ্ছে। স্থান নির্ধারণ ও সেতুর ড্রইং নিয়ে কাজ হচ্ছে। এরপর ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে দ্রুত কাজ করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version