মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়: দুর্নীতি-দুঃশাসন, অর্থ পাচার ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে দেশের ৬৪ জন জেলা প্রশাসক ও ৪৯৫ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেছেন হানিফ বাংলাদেশী। হানিফ বাংলাদেশীর প্রকৃত নাম মোহাম্মদ হানিফ। তিনি দেশব্যাপী হানিফ বাংলাদেশী নামে পরিচিত। তার বাড়ি নোয়াখালী সদর উপজেলার মাইজদী গ্রামে। তিনি আবদুল মান্নানের ছেলে।
বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হেল্প ডেস্কে স্মারকলিপি দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন তিনি। এসময় ঘুষ, দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান সহ গলায় ফেস্টুন ও হাতে ’বদলে যাও, বদলে দাও’ স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।
গত ৫ই জুন হানিফ বাংলাদেশি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেয়ার মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করেন। প্রতিদিন ৩টি উপজেলা প্রদক্ষিণ করে দীর্ঘ ৮ মাস তথা ১৬০ দিনে ৪৯৫ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে বুধবার পঞ্চগড়ে এসে কর্মসূচি সমাপ্ত করেন।
হানিফ বাংলাদেশী তার স্মারকলিপিতে বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধ, পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে এনে যুবকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করাসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেছেন। হানিফ বাংলাদেশী বলেন, ঘুষ-দুনীতি, অর্থ পাচার সর্বগ্রাসী রুপ নিয়েছে সমাজ রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে। চরম অবক্ষয় চলছে সামাজিক, পারিবারিক এবং মানবিক মূল্যবোধের।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের কৃষকেরা উৎপাদনশীল, শ্রমিকরা পরিশ্রমী, ছাত্র-যুবকেরা মেধাবী; কিন্তু দুর্বৃত্ত¡ায়িত রাজনীতি, দুনীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারি আমলা অফিসার, দুর্নীতিগ্রস্ত বড় বড় ব্যবসায়ীরা দেশ থেকে লক্ষ-কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে আমাদের সকল অর্জনকে ব্যাহত করছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু মানবিক মূল্যবোধের উন্নতি হচ্ছেনা। আশা করি সম্ভাবনাময় এই অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে এবং চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঘুষ, দুর্নীতি ও অর্থপাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করবেন কর্তারা।
২০১৯ সালের মার্চে হানিফ ভোটাধিকারের দাবিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় একক পদযাত্রা করেন। একই বছর নির্বাচন কমিশন অফিসে পচা আপেল দিয়ে প্রতিবাদ জানান। এরপর তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৬৪ জেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি পালন এবং জেলায় জেলায় লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। ২০২০ সালে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে পদযাত্রাও করেন তিনি।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য