-->
শিরোনাম

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তার মাটি বিক্রির অভিযোগ

বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তার মাটি বিক্রির অভিযোগ
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ইউনিয়নের গাজীখালী নদীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তার মাটি কেটে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে

বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ি এলাকার সরকারি রাস্তার মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ মিলেছে। ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ কাজে বাধা দিলে মামলার হুমকি দিয়েছে চেয়ারম্যানপুত্র। অভিযোগ, জনগণকে চাপ সৃষ্টি করে আধা কিলোমিটার রাস্তার মাটি বিক্রি করেছে সাটুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পিন্টু।

 

জানা গেছে, মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ি এলাকার গাজীখালী নদীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তার মাটি কেটে বিক্রি করেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। প্রায় ৩৫ বছর আগে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাসেম আলী মাস্টার ওই রাস্তাটি নির্মাণ করেছিলেন। আশপাশের ৭ গ্রামের অসংখ্য লোক ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে হাটবাজার করতেন। সেই রাস্তার মাটি কেটে বিক্রি করে দিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান।

 

স্থানীয় বাসিন্দা নাছির উদ্দিন বলেন, আমাদের বাপ-দাদার জমির ওপর দিয়েই প্রায় ৩৫ বছর আগে কাসেম আলী মাস্টার চেয়ারম্যান রাস্তাটি বানিয়েছিল। সেই পুরোনো রাস্তার মাটি কেটে বিক্রি করেছে আমাদের রানিং চেয়ারম্যান। আমাদের গ্রামে প্রতিবাদ করার মতো লোক নেই। তাই চেয়ারম্যান ক্ষমতা দেখিয়ে রাস্তার মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করার সাহস পেয়েছে।

 

হাফিজ নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, এলাকার লোকদের বাধা উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান সরকারি রাস্তার মাটি কেটে নিয়েছে। আমাদের বাধা চেয়ারম্যান শুনেনি। চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ করে আমরাও আওয়ামী লীগ করি। তার বড় বড় লোক আছে তাই হুমকি-ধমকি দিয়ে রাস্তার মাটি কেটে নিয়েছে।

 

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান লোক ভালো না। তার ভয়ে এলাকার কেউ সাহস করে বাধা দিতে পারেনি। মিথ্যা মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে চেয়ারম্যান পিন্টু সরকারি রাস্তার মাটি কেটে বিক্রি করেছে। তার ছেলে সোহাগ প্রতিদিন এসে লোকজনদের ভয়ভীতি দেখিয়ে রাস্তার মাটি কেটে মোটা অংকের টাকা কামিয়ে নিয়েছে।

 

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুবেল বলেন, রাস্তার ওপর নদী খননের মাটি ফেলা হয়েছিল। সেই মাটি চেয়ারম্যান সাহেব কিনে নিয়ে ছিল। নদী খননের মাটি বের করার রাস্তা না থাকায় ওই রাস্তা কেটে মাটি বের করা হয়েছে। তবে রাস্তা তেমন বড় ছিল না।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটি কেটে নেয়ায় রাস্তাটি এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। অনেকেই রাস্তার জায়গায় বিভিন্ন জাতের ফসল রোপণ করেছে। প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তার মাটি কেটে নেয়ার ফলে এখন আর রাস্তার ব্যবহার হচ্ছে না। রাস্তাটি প্রায় ৭ ফুট উচ্চতা ছিল। ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে এমন কিছু চিত্র এখনো দেখা যায়।

 

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোনো রাস্তা কাটি নাই। আমি নদীর মাটি কেটেছি। ওইখানে যে রাস্তা ছিল সেই রাস্তা নদীতে ভেঙে গেছে। হাঁটার মতো রাস্তা ছিল। ওই রাস্তার পাশ দিয়ে আরেকটি নতুন রাস্তা করে দিয়েছি।

 

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আরা বলেন, চেয়ারম্যান কেন, কোনো ব্যক্তিই সরকারি রাস্তা কাটতে পারবে না। যদি চেয়ারম্যান রাস্তা কেটে থাকে তাহলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version