রংপুরের পীরগঞ্জে তিনটি ইউনিয়নে কয়েক হাজার কৃষক দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা থেকে চিরস্থায়ীভাবে মুক্তি পাচ্ছেন। উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের শান নদী এলাকার কৃষকদের বছরের পর বছর রক্তপানি পরিশ্রমে ফসল উৎপাদনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জলাবদ্ধতা।
ওই জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলার প্রবাহমান শান নদী কতিপয় দখলদার অবৈধভাবে মাটি ভরাট করেছিল। যে কারণে চলমান শান নদী এক সময় মরা নদীতে রূপ নেয়। শানেরহাট, পাঁচগাছি এবং মিঠিপুর ইউনিয়নের ২০টিরও বেশি গ্রামের মানুষ কৃষি চাষাবাদ নিয়ে কয়েক যুগ ধরে হতাশায় ভুগছিলেন। আবাদ মৌসুমের ধান এবং সবজি প্রতিবছর পানির নিচে তলিয়ে থাকত। এলাকার কৃষক ফসল উৎপাদন করতে না পেরে দিন দিন কর্মহীন অবস্থায় অনেকেই কর্মের সন্ধানে অন্যত্র ছুটে বেড়াত।
শান নদী খননের ফলে এলাকার কৃষকরা আগের মতো কৃষিজমিতে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। পার্বতীপুর গ্রামের কৃষক রিয়াজুল, সুলতান মিয়া, মোসলেম, আশরাফুল, বাদশা ও মেহেদুল ইসলাম বলেন, তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষকের আবাদি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকত। আবাদ মৌসুমে নিচু জমিতে ফসলের চাষ করে কৃষকরা কোনো ফসল ঘরে তুলতে পারত না।
এক সময়ের মরা শান নদী পুনঃখননের ফলে নদী যেমন তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে, তেমনি কৃষকদের হতাশাও দূর হয়ে গেছে। পাঁচগাছি ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, শানেরহাট এলাকার নদী খননের কাজ শেষ হয়েছে। এ এলাকার কৃষক মনের আনন্দে চাষাবাদ করছে।
আমাদের ইউনিয়নের নদীটির খনন কাজ শেষ করা হলে কৃষকদের দুর্ভোগ দূর হবে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) পীরগঞ্জ জোন সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান বলেন, পীরগঞ্জ উপজেলার শান নদী মরা নদীর রূপ নিয়েছিল। এতে করে তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি বিলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো।
এ এলাকার কৃষকের দুরবস্থা দেখে বিএমডিএ নদী খনন কাজ হাতে নেয়। ইতিমধ্যে প্রায় ৬ কিলোমিটার নদীর খনন কাজ শেষ হয়েছে। আগামী অর্থবছরে তারা অবশিষ্ট নদীর খনন কাজ শেষ করবেন বলেও তিনি জানান।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য