ঘন কুয়াশার কারণে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে দীর্ঘ সাড়ে ১১ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার পর কুয়াশার ঘনত্ব কমে এলে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। এতে দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ফলে ভোগান্তিতে রয়েছে চালক ও যাত্রীরা।
এর আগে গত রোববার রাতে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে নৌদুর্ঘটনা এড়াতে রাত ১১টার দিকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় বিআইডবি¬উটিসি কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাঝ নদীতে তিনটি ফেরি আটকা পড়ে।
সরেজমিন ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের তিন কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে যাত্রীবাহী পরিবহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের সারি। আটকে থাকা যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা অনেকেই গাড়িতেই বসে আছেন, আবার অনেকেই গাড়ি থেকে নেমে বাইরে চায়ের স্টলে ভিড় করছেন।
কেউ কেউ আবার গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে ফেরিঘাটের দিকে এগোচ্ছেন। ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কসহ পন্টুনে কিছু গাড়ির সঙ্গে বেশকিছু যাত্রী কখন ফেরি চালু হবে সে জন্য অপেক্ষা করছেন।
যশোর থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের চালক মো. ইয়াছিন বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছাই। তখন জানতে পারি ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেই থেকে গাড়িতেই বসে আছি।
যাত্রী আসমা আক্তার বলেন, রাত থেকে গাড়িতে বসে আছি। সারা রাত খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কত সময় গাড়িতে বসে থাকা যায়। বাস থেকে নেমে যে বাইরে হাঁটাহাঁটি করব তারও উপায় নেই।
আরেক যাত্রী রাশেদুল ইসলাম বলেন, শীতে সারারাত কষ্ট করতে হয়েছে। একটুও ঘুমাতে পারি নাই। গাড়িতে বসে থেকে যখন খুব খারাপ লাগছিল তখন বাস থেকে নেমে একটু হেঁটে আবার এসেছি। এভাবেই রাত পার করতে হয়েছে। এখন সকাল ৯টা বাজে। কুয়াশায় পুরো ঘাট ঢেকে আছে।
বাগেরহাট থেকে ছেড়ে আসা ট্রাকচালক আশরাফুল বলেন, রাত ১২টার সময় এসে জানতে পারি, ফেরি বন্ধ। তখন থেকে বসে আছি। ফেরি বন্ধ না থাকলে ভোরে ঢাকায় পৌঁছে যেতাম, অথচ এখনো ফেরিঘাটেই বসে আছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, গত রোববার সন্ধ্যা থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত ১১টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে নদী পথ অস্পষ্ট হয়ে গেলে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। সে সময় মাঝ নদীতে বনলতা, হাসনাহেনা ও রজনীগন্ধা নামে তিনটি ফেরি আটকা পড়ে।
কুয়াশা কেটে যাওয়ায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য