-->
শিরোনাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সমলয় পদ্ধতিতে চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সমলয় পদ্ধতিতে চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু
রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণ করছেন একজন কৃষক

ফলন বৃদ্ধি ও শ্রমিক খরচ কমাতে প্রথমবারের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় সমলয়ে বোরো ধান চাষাবাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

 

ডিসেম্বরের শেষের দিকে উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নের ষাঁড়ব্রুজ এলাকায় ট্রে পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন শুরু করা হয়। ওই ব্লকের কৃষকরা কৃষি প্রণোদনা পেয়ে ও উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে এবার বোরো ধান চাষাবাদ শুরু করেছেন। ৫০ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাত এসএল ৮ এইচ ধানের চারা তৈরি করে যন্ত্রের সাহায্যে রোপণ করা হচ্ছে। এই আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ধানের উৎপাদন খরচ কমানোসহ শ্রমিক সংকট নিরসন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

 

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় ষাঁড়ব্রুজ এলাকায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র দিয়ে চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন গোমস্তাপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামছুল আজম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার।

 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফিরোজ আলীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাওসার আলী, রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আজম, কৃষক সাইদুল ইসলাম ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের চালক আরিফুল ইসলাম। 

 

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নের ষাঁড়ব্রুজ ব্লকের কৃষি প্রণোদনা প্রাপ্ত ৫৪ জন কৃষককে তাঁদের দেড়শ বিঘা (৫০ একর) জমিতে এই পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

 

কৃষির সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল একই জাত ব্যবহার, ট্রেতে বীজ বপন, চারা রোপণে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার ও আন্তঃপরিচর্যা, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা, ধান কর্তনে কম্বাইন্ড হারভেস্টার ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো, উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকটের সমাধান সম্ভব হবে এই সমলয় চাষাবাদে। রোপণ পদ্ধতি দেখে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়েছে।

 

কৃষক সাইদুল ইসলাম ও আব্দুর রশিদ জানান, এই পদ্ধতিতে চারা বপন ও রোপণ করতে কখনো দেখেনি। প্রথমবারের মতো উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ৫০ একর জমিতে তিনিসহ ৫৪ জন কৃষক সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদ করা হচ্ছে। খরচ কম, শ্রমিক লাগে কম। আশা করছেন ভালো উৎপাদন হবে তাদের।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষে অর্থের অপচয় কম ও সময় সাশ্রয় হয়। সফলভাবে ফলন উৎপাদনের জন্য সমলয়ে চাষাবাদ পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষি মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। কৃষকরা এই পদ্ধতিতে পাচ্ছেন বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ। ট্রে পদ্ধতিতে কৃষক ভালো মানের চারা উৎপাদন করে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জমিতে ফলাতে পারবে।

 

এ ছাড়া মেশিনের মাধ্যমে ধান রোপণ, কাটা, মাড়াইসহ সব প্রক্রিয়া মেশিনের সাহায্যে সম্পন্ন হবে। ফলে শ্রমিক সংকট থেকে মুক্তি ও অল্প খরচে ধান রোপণ ও মাড়াই করে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষক। খরচ কমবে এবং অধিক লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।

 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামছুল আজম বলেন, খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজন। সমলয় পদ্ধতিতে ট্রেতে চারা উৎপাদনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারসহ ধানের উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version