-->

বাণিজ্যে স্থবিরতা: আর্থিক সংকটে ব্যবসায়ীরা

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
বাণিজ্যে স্থবিরতা: আর্থিক সংকটে ব্যবসায়ীরা

কুমিল্লা বাণিজ্যিক নগরী লাকসামসহ জেলার দক্ষিণাঞ্চলের হাটবাজারজুড়ে নানা কারণে গ্রামীণ মুক্তবাজার অর্থনীতি যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক কোনো কোনো সেক্টরে ভ্রান্তনীতি ও স্থানীয় অপরাজনীতির বেড়াজালে জনজীবন নানা ঝুঁকিতে। এলাকার নিত্যদিন ছাড়াও সাপ্তাহিক হাটের দিনে লোকজনের সমাগম একদম নেই।

 

বিগত আড়াই বছর ধরে মহামারি করোনা সংক্রমণের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবিরতায় সব শ্রেণির ব্যবসায়ীরা পড়েছেন আর্থিক সংকটে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, জেলার দক্ষিণাঞ্চলের লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় অপরাজনীতি আর ভিন দেশীয় নানা আগ্রাসনে এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীদের ওপর ভর করেছে বিরামহীন লোকসানের বোঝা।

 

বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসনের চলছে সংস্কার, পৌর শহরকে আধুনিকায়নসহ নানা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে এলাকার নিস্তব্ধ নির্ঘুম আহাজারি ও আর্তনাদের বোবা কান্নারত ব্যবসায়ীদের কল্যাণে কতটুকু ভ‚মিকা রাখবে তা অবশ্য দেখার বিষয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় দারিদ্র্যের কঠিন আঘাত এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের দমাতে না পারলেও মানসিক দিক থেকে দারিদ্র্যের চেয়ে আরো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে; তবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে ভিন্ন কথা।

 

সব শ্রেণির ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে মুক্তিযুদ্ধে চেতনা ঘিরে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ দর্শনকে অবমূল্যায়নে ওদের আজ চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটলেও আগামী দিনে অপরাজনীতির শংকায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি আসার মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। মহামারি করোনা সংক্রমণ গত ৩ বছর ধরে জানান দিয়েছে এলাকার সামাজিক পরিবেশ অবক্ষয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য যেন পাঠার বলি।

 

সামাজিকভাবে মানুষের জীবন প্রণালি, ব্যবসাবান্ধব কর্মসূচি ও চাওয়া পাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে গণতান্ত্রিক সমাজের অপরিহার্যতা স্থিতিশীল রাখার কোনো বিকল্প নেই। আবার পর্দার অন্তরাল থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কিংবা পেশিশক্তির ছাড়পত্র নিয়ে সাময়িক মৌলিক গণতন্ত্রের আওয়াজ তোলা যায়। কিন্তু সাধারণ ব্যবসায়ীদের কল্যাণে নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব নয়।

 

সূত্রটি আরো জানায়, জেলা দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক মহামারি করোনার থাবা এবং বৈরী আবহাওয়াসহ নানা প্রতিক‚লতায় ব্যবসায়ীদের মাঝে নানা কৌত‚হল জন্ম দিয়েছে। তারা ঘুরে দাঁড়াতে তাকিয়ে আছেন প্রকৃতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে। এলাকায় স্বল্পসংখ্যক উৎপাদিত পণ্যনির্ভর এবং অতিমাত্রায় ভিনদেশীয় পণ্যের নির্ভরতায় ব্যবসা-বাণিজ্য আজ গতিহারা। দেশীয় ও ভিনদেশীয় পণ্য বেচাকেনায় সাধারণ ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৭০ ভাগ পণ্যই ভিনদেশি।

 

ওইসব পণ্য বাণিজ্যে মূল্য পার্থক্য থাকলেও গুণগত মান ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে রয়েছে নানা বিতর্ক। ভিনদেশীয় পণ্যগুলো আমদানির অন্তরালে চোরাপথে হুন্ডি-ডলার কিংবা মুদ্রা পাচার এবং চোরাপথে আমদানি-রপ্তানী ক্ষেত্রে অভিনব পন্থায় সরকারি মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও আয়কর ফাঁকি দিচ্ছে পাইকারি আড়ৎদাররা। কিছু কিছু দেশীয় পণ্য ভিনদেশীয় পণ্যের প্রভাবে বাজার মূল্যে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে।

 

অথচ দেশীয় উৎপাদিত পণ্য আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজারে অন্যান্য দেশীয় পণ্যের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে প্রতিযোগিতা করছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন এবং ব্যবসায়ী সমিতির একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাদের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version