মো. নুর হাসান, পঞ্চগড়: ফুলের ভরা মৌসুমে বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ তিন দিবসের বাজার ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পঞ্চগড়ের ফুলচাষিরা।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল এলাকার বুড়িপাড়া গিয়ে দেখা যায়, মাঠভর্তি বাগানে শোভা পাচ্ছে টিউলিপ, গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্র মল্লিকা, গøাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জিপসিসহ নানা জাতের ফুল। সেই ফুলের বাগানে কেউ করছেন আগাছা দমন, আবার কেউ করছেন কীটনাশক স্প্রে।
ফুলচাষি কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর বলেন, বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুলের চাহিদা থাকে বেশি। সেই চাহিদা মেটাতে আমরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। বাজার ধরার জন্য ফুলে সার, ওষুধ দিচ্ছি। ফুলটা যেন ভালো থাকে এ জন্য কাজ করছি।
শামসুজ্জামান নামে এক ফুলচাষি জানান, ৯ বছর ধরে তিনি ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত। তিনি ৮ বিঘা জমিতে ফুলের আবাদ করেছেন। এসব ফুল ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।
দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের ফুলচাষি আব্দুর রহিম জানান, সারা বছরই তারা ফুল বিক্রি করে থাকেন। তবে প্রতিবছর বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষের দিন, ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বসন্তবরণসহ বিশেষ দিনগুলোতে ফুলের অতিরিক্ত চাহিদা থাকে। এ সময় দামও থাকে ভালো।
এদিকে প্রতিদিন ফুলের বাগানগুলোতে ঘুরতে আসে সব বয়সের দর্শনার্থী, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা। প্রকৃতির টানে ব্যস্ত সময়ে একটু অবসরের প্রয়োজনে বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসে বাগানগুলোতে।
জগদল এলাকার বুড়িপাড়ায় ফুলবাগানে ঘুরতে আসা জান্নাতুন মারুফা নামে এক তরুণী বলেন, এই বাগানটি সম্পর্কে লোকমুখে যা শুনেছি বাস্তবে বাগানটি তারচেয়ে আরো অনেক বেশি সুন্দর! এখানে এসে সত্যিকার অর্থেই অনেক আনন্দিত হলাম।
শারমিন আক্তার নামে এক দর্শনার্থী বলেন, প্রতিবছর এই সময়টাতে আমরা ফুল বাগানে ঘুরতে আসি। চমৎকার লাগছে। আসলেই এই বাগান আমাকে মুগ্ধ করেছে।
পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, উৎপাদন ব্যয় কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। চলতি বছরে পঞ্চগড়ে ৮ দশমিক ৩ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে ফুলচাষিদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য