-->

গোলাম আজমের নামে নির্মিত কক্সবাজার কলেজের গেট ভেঙে ফেলা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
গোলাম আজমের নামে নির্মিত কক্সবাজার কলেজের গেট ভেঙে ফেলা হচ্ছে
কক্সবাজার সরকারি কলেজের গেট

কক্সবাজার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রধান ফটকে সাবেক জামায়াত আমির গোলাম আজমের নামে নির্মিত গেট অবশেষে অপসারিত হচ্ছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি শহরের বিলাসবহুল হোটেল মিলনায়তনে আয়োজিত কক্সবাজার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হীরকজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

সভায় উপস্থিত কক্সবাজার কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গোলাম আজমের নামে নির্মিত গেট ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়।

 

হীরকজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহব্বায়ক কক্সবাজার কলেজের সাবেক জিএস জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান এই গেট অপসারণের ঘোষণা দেন। আগামী ৪ মার্চ হীরকজয়ন্তী উদযাপনের কথা রয়েছে। এর আগেই কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমের নামে স্থায়ীভাবে নির্মিত গেট ভেঙে ফেলা হবে। স্বাধীনতার মাসে একজন যুদ্ধাপরাধীর স্মৃতিচিহ্ন মুছে যাবে কক্সবাজার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গেট থেকে এর চেয়ে খুশির খবর আর কি হতে পারে? এমনটাই মনে করেন কক্সবাজারের প্রগতিশীল সচেতন ছাত্র জনতা।

 

জানা গেছে, ১৯৯১ সালে কক্সবাজার কলেজে ইসলামী ছাত্র শিবিরের নবীনবরণ ও সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আজম। তার আগমন উপলক্ষে ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে কক্সবাজার কলেজের প্রধান গেট গোলাম আজমের নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে নির্মাণ করা হয়। তখন কলেজের ছাত্র সংসদসহ পুরো কলেজের নিয়ন্ত্রণ করত ইসলামী ছাত্র শিবির।

 

হীরকজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কক্সবাজার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফজলুল করিম বলেন, দীর্ঘ ১৯৮০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কক্সবাজারে কলেজের নিয়ন্ত্রণ ছিল ইসলামী ছাত্রশিবিরের হাতে। অন্য কোনো ছাত্র সংগঠনের প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে রাজনীতি করার সুযোগ ছিল না।

 

দীর্ঘ ৩০ বছর ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজত্ব চলে কক্সবাজার কলেজে। এমনকি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও কক্সবাজার কলেজের সব কর্মকাÐ চলত শিবিরের নির্দেশনায়। শিক্ষার্থী ভর্তি থেকে পাস, ফেল ও হোস্টেল বরাদ্দ সবই ছিল ইসলামী ছাত্রশিবিরের নিয়ন্ত্রণে।

 

এক প্রশ্নের জবাবে হীরকজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুল করিম জানান, যখন গোলাম আজমের নামে কক্সবাজার কলেজের গেট নির্মাণ করা হয়েছিল তখন তিনি ওই কলেজের প্রফেসর ছিলেন। তখন অধ্যক্ষ ছিলেন গুরুপদ পালিত। তিনি শিবিরের চাপে বাধ্য হয়েছিলেন গোলাম আজমের নামে নির্মিত গেটের অনুমোদনপত্রে স্বাক্ষর করতে।

 

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ’৯০-এর ছাত্রনেতা বর্তমান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, কক্সবাজার কলেজের প্রধান ফটকে নির্মিত গোলাম আজমের নামে গেট নির্মাণ বন্ধ করতে এবং নির্মাণ হওয়ার পর তা ভেঙে ফেলার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি।

 

তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম কোনো কাজে আসেনি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version