-->
শিরোনাম

ফাগুনে আগুনরাঙা তাহিরপুরের শিমুল বাগান

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
ফাগুনে আগুনরাঙা তাহিরপুরের শিমুল বাগান
সুনামগঞ্জে জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান

ফুলের সৌন্দর্য আর পর্যটকদের পদভারে মেতে উঠেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের শিমুল বাগান। কেউ পরেছেন বাসন্তী রঙের শাড়ি, কেউ নীল। খোঁপায় গুঁজেছেন টকটকে লাল শিমুল। বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবি বা ফতুয়া পরে তাদের সঙ্গে এসেছেন প্রিয়জন। কেউ তুলছেন ছবি আবার কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছেন।

 

জেলা শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে শিমুল বাগানের অবস্থান। মানিগাঁও গ্রামে ১০০ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠা শিমুল বাগানের প্রতিটি গাছে এসেছে ফুল। সবুজ জলের জাদুকাটা নদী পেরিয়ে যেতে হয় এই বাগানে। বিস্তীর্ণ বালুচর হেঁটে গিয়ে শিমুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয়।

 

শিমুল বাগানে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই ফুল ফুটতে শুরু করে। লাল ফুলের কল্যাণে পুরো এলাকায় হয়ে ওঠে রক্তিম আভা। ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে, মাঝে জাদুকাটা নদী আর এপারে শিমুল বাগান।

 

স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতি বছর ফাগুনে আগুনরাঙা প্রকৃতির এই রূপ উপভোগ করতে তাহিরপুরে আসেন পর্যটকরা। এ বছরও পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে পর্যটকদের উপচেপড়া ঢল নামে জাদুকাটা ও মাহারাম নদীর তীরের জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগানে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রতিদিনই আসছেন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। গাছে গাছে রক্তরাঙা শিমুল। এ বছর বাগানের তিন হাজার শিমুল গাছের মধ্যে দুই হাজার শিমুল গাছে ফুল ফুটেছে।

 

পাশাপাশি বেড়েছে পেশাদার ফটোগ্রাফারদের ব্যস্ততা। পাশাপাশি ব্যস্ততা বেড়েছে শিমুল ফুল দিয়ে মালা, ভালোবাসার প্রতীক তৈরি করার কারিগরদের মধ্যেও।

 

ঢাকা থেকে বন্ধুদের নিয়ে শিমুল বাগানে ঘুরতে গেছেন লুৎফর। তিনি বলেন, ‘এই বাগানের অনেক ভিডিও দেখেছি। বন্ধুদের সঙ্গে প্ল্যান করে সবাই মিলে এসেছি। এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। একদিকে জাদুকাটা আর তার তীরেই এই বাগান।’

 

উপজেলার সোহালা গ্রামের বৃক্ষপ্রেমী প্রয়াত জয়নাল আবেদীন ২৫ বছর আগে তিন হাজার শিমুলের চারা রোপণ করে গড়ে তুলেন এই বাগান। ২০১২ সালে বাগানে প্রথন শিমুল ফুল ফোটে। ধীরে ধীরে এই বাগানের সৌন্দর্য বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

 

তবে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যটকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। বাগানটি এখন দেখভাল করেন জয়নাল আবেদীনের ছেলে রাখাব উদ্দিন। তিনি জানান, পর্যটকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের খেলাধুলার জন্য বিভিন্ন রাইড করা হবে। বাগানের পাশে গড়ে তোলা হবে রেস্ট হাউস, বাড়ানো হবে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।

 

চলতি বছর বাগানে আরো তিন শতাধিক শিমুলের চারা লাগানো হয়েছে বলে জানান বাগান মালিক।

 

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জের পর্যটনশিল্পের বিকাশে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে রিসোর্ট স্থাপন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version