-->

ইপিআইয়ের টিকা নেই: শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত

আশরাফুল ইসলাম সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ইপিআইয়ের টিকা নেই: শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল

আশরাফুল ইসলাম সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ইপিআই হলো বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা কর্তৃক পরিচালিত টিকাদান কর্মসূচি, যার লক্ষ্য সারা পৃথিবীর সকল শিশুকে এ কর্মসূচির অধীনে নিয়ে আসা। জন্মের পর শিশুদের ধাপে ধাপে দেয়া সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) টিকা গত এক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোথাও নেই। ফলে কেন্দ্রে এসেও সন্তানদের টিকা না দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন মায়েরা। এতে শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

 

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইপিআই কর্মসূচির মধ্যে আছে যক্ষা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা। শিশুর জন্মের পর প্রথম বিসিজি টিকা দিতে হয়। বয়স ৬ সপ্তাহ হলে আইপিভি টিকার প্রথম ডোজ ও ১৪ সপ্তাহে ২য় ডোজ দিতে হয়।

 

একই সময় পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপিটি, হেপাটাইটিস-বি, হিব), ওপিভি এবং পিসিভি টিকার ১ম ডোজ দিতে হয়। কমপক্ষে ৪ সপ্তাহের ব্যবধানে এসব টিকার ২য় ও ৩য় ডোজ দিতে হয়। শিশুর ২৭০ দিন পূর্ণ হলেই এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকার ১ম ডোজ এবং ১৫ মাস হলেই ২য় ডোজ দিতে হয়। তা না হলে শিশুর স্বাস্থ্যসেবা হুমকির সম্মুখীন হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত একমাস ধরে বিসিজি টিকা ছাড়া শিশুদের কোনো টিকা মজুত নেই। ফলে শিশুদের সময় অনুযায়ী টিকাগুলো দেয়া যাচ্ছে না।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ইপিআই টিকা কেন্দ্রে স্টাফরা অলস সময় পার করছেন। মাঝে মধ্যে বিসিজি টিকা দিতে নবজাতকদের নিয়ে মায়েরা আসছেন। তাদের টিকা দেয়া হচ্ছে। তবে ২য় ধাপে টিকা দিতে আসা শিশুদের অভিভাবকদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

 

টিকা দিতে কেন্দ্রে আসা এক শিশুর মা জানান, তার বাচ্চার ৩য় ধাপের টিকা দেয়ার সময় ছিল ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ। সেদিন আসার পর জানানো হয়েছিল টিকা নেই, কয়েকদিন পর আসবে। এখন আসার পর বলে, পরে দেয়া হবে।

 

আরেক নারী বলেন, ‘আমার সন্তানের ১ম টিকা দিয়েছিলাম ২৮দিনের মাথায়। এখন ২য় ডোজের তারিখে টিকা না থাকায় পরে আসতে বলেছে।’

 

এ বিষয়ে জেলার ইপিআই সুপারিন্টেনডেন্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ বছরে ৯১ হাজার শিশুকে টিকা দিয়ে থাকি। জেলার ৯৮টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২৪টি কেন্দ্রে মাসে একবার করে টিকা দেয়া হয়।

 

এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন টিকা দেয়া হচ্ছে। আমাদের প্রতি ৩ মাস পর পর টিকা পাঠানো হয়। এতোদিন ঢাকাতেই টিকার সংকট ছিল। অচিরেই সংকট কেটে যাবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. একরাম উল্লাহ বলেন, ‘টিকার জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

 

দ্রুত টিকা আসার বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।’

 

ভোরের আকাশ//নি 

মন্তব্য

Beta version