-->

এক সঙ্গে তিন কন্যার জন্ম দিয়ে দুশ্চিন্তায় ময়না বেগম

বাগেরহাট প্রতিনিধি
এক সঙ্গে তিন কন্যার জন্ম দিয়ে দুশ্চিন্তায় ময়না বেগম
ময়না বেগমের তিন কন্যাশিশু

বাগেরহাটের শরণখোলায় এক সঙ্গে তিন কন্যাশিশুর জন্ম দিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দরিদ্র ময়না বেগম (৩৫)। স্বামী পরিত্যক্তা ময়না বেগমের দরিদ্র পরিবারে ৭ বছর বয়সি ছেলে ও ৪ বছর বয়সি মেয়ে থাকতেও আবার তিন কন্যার জন্ম হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তার স্বজনদের মধ্যেও। সদ্য জন্ম নেয়া তিন শিশুকন্যা সুস্থ থাকলেও ওজন কিছুটা কম বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

 

শনিবার বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর ভোলারপাড় গ্রামের মৃত ছায়েদ তালুকদারের মেয়ে এবং মঠবাড়িয়ার জামাল হাওলাদারের স্ত্রী ময়না বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।

 

রোববার সকাল ৯টায় হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তিনি তিন কন্যাশিশুর জন্ম দেন। বর্তমানে মা ও তিন কন্যা সুস্থ আছে। তবে শিশুদের ওজন কম থাকায় ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বেবি হোমে পাঠানোর চিন্তা করছেন চিকিৎসকরা।

 

তিন শিশুকন্যার নানি পিয়ারা বেগম (৬৫) বলেন, আমি ভিক্ষা করে সংসার চালাই। মেয়ের গর্ভের বয়স যখন ৫ মাস তখন ওর জামাই চলে যায়। এরপর আর আসেনি। সেই থেকে আমি দুই নাতি ও অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে কোনো রকম খেয়ে-না খেয়ে থেকেছি। কিন্তু এখন আবার এক সঙ্গে তিন কন্যা (নাতনি) হয়েছে। তাই খুব চিন্তায় আছি কীভাবে ওদের বড় করব।

 

ময়না বেগমের বোন রাশিদা বেগম বলেন, আমরা ৫ বোন সবাই অসহায়। কেউ কাউকে সাহায্য করার মতো সামর্থ্য নাই। তাই এখন চিন্তা করছি সদ্য জন্ম নেয়া এই তিন শিশুকন্যাকে নিয়ে কি করব। খবর শুনে অনেকেই ওদের নিতে চায়। তবে, এখনো চিন্তা করিনি কি করব।

 

শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সেবিকা (নার্স) রাবেয়া আক্তার বলেন, শনিবার ময়না বেগমকে নিয়ে হাসপাতালে আসে। এরপর আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখি তিনটা বাচ্চা রয়েছে পেটে। তাই রোববার সকাল ৯টার দিকে নরমাল ডেলিভারি করে তিনটি কন্যাশিশুকে প্রসব করাই। বর্তমানে মা ও তিন শিশু ভালো আছে।

 

শরণখোলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রিয় গোপাল বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে তিনটা বাচ্চা খুব ভালোভাবে ডেলিভারি হয়েছে। কিন্তু ওদের ওজন কম তাই ইনফেকশনের ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য বেবি ইনকিউবেটরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বাচ্চার মা সুস্থ রয়েছে।

 

শরণখোলা উপজেলা চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন শান্ত বলেন, আমি পিয়ারা বেগমের পরিবার সম্পর্কে আগে থেকেই জানি। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে পিয়ারা বেগমের ভিক্ষার টাকায়ই তাদের পরিবার চলে।

 

শুনেছি পিয়ারা বেগমের জামাই তার মেয়ে ময়না বেগমের কোনো খোঁজ খবর নেয় না। এটা খুবই দুঃখজনক।

 

আমি সন্তান জন্মের কথা শুনে হাসপাতালে দেখে এসেছি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version