কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ডাকাতিয়া নদী সংলগ্ন ঘাগুরিয়া নদীর মুখে ৩০ বছর আগে মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য, পানি জমিয়ে রেখে তা দিয়ে সেচ দেওয়া। কয়েক বছর ধরে নদীতে পানি না থাকায় মৌসুম শুরু হলেও কৃষকরা বোরো ধান রোপণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
আংশিক কিছু চাষাবাদ করলেও পানির অভাবে ভালো ফসল উৎপাদন হয় না। তাই হাজারো কৃষকের দাবি মনোহরগঞ্জ আলিম মাদ্রাসার দক্ষিণে ডাকাতিয়া ও ঘাগুরিয়া নদীর মধ্যখানে একটি স্লুইসগেটের।
কৃষকরা জানান, একটি স্লুইসগেট হলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তারা। এতে বোরো ধানের চাষ হবে ২০০ একর জমি। উৎপাদন হবে হাজারো মণ ধান। হাসি ফুটবে বহু কৃষকের মুখে। এখানে স্লুইসগেট হলে উপকৃত হবেন হাটিরপাড়, দিশাবন্দ, গোয়ালীয়ারা, খানাতুয়া, সিকচাইল, হাতিয়ামুড়ি, মেল্লা, বান্দুয়াইন, খিলা, তাহেরপুর, দাঁড়াচৌ, ভরনীখন্ড সহ অনেক গ্রামের কৃষক।
দিশাবন্দ গ্রামের প্রবীণ কৃষক মো. কাদির হোসেন বলেন, আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঘাগুরিয়া নদীর মুখে একটি স্লুইসগে। কারণ, পানির অভাবে অনেক জমি অনাবাদি থাকে। নদীতে পানি থাকলে আমাদের এলাকায় বোরো ধানের ফসল দিগুণ উৎপাদন হবে বলে আশা করি।
মৈশাতুয়া ইউনিয়ন গোয়ালীয়ারা গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ বলেন, নদীতে পানি না থাকায় আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বোরো ধান রোপণ করতে পারি না। আমাদের অঞ্চলে বছরে একবার ফসল উৎপাদন হয়। মার্চ ও এপ্রিল মাসে নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ে। পানির সংকটে ভালো ফসল উৎপাদন হয় না। তাই ঘাগুরিয়া নদীর মুখে একটি স্লুইসগেট হলে কৃষকের আর পানির দুর্ভোগ থাকবে না।
খিলা ইউপি সদস্য মো. মাইন উদ্দিন মেম্বার জানান, আমার গ্রাম ভরনীখÐ। এ গ্রামে অনেক কৃষিজমি অনাবাদি রয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় বোরো মৌসুমে কৃষক অনেক ভোগান্তিতে পড়েন। তাই ঘাগুরিয়া নদীর মুখে একটি স্লুইসগেট কৃষকের জন্য একান্ত জরুরি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহানুর ইসলাম জানান, এ বছর ৯ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। স্লুইসগেট হলে এলাকার কৃষকরা অনেক উপকৃত হবে এবং অনেক অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আসবে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি, সেচ) লাকসাম, মনোহরগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, আমাদের অফিসে ছোটখাটো বরাদ্দ আসে। একটি স্লুইসগেট নির্মাণে যত বড় অঙ্কের বরাদ্দ প্রযোজন, তা আমাদের দেওয়া হয় না।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য