-->
শিরোনাম

বগুড়ার চরাঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলন: দামে খুশি কৃষক

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া
বগুড়ার চরাঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলন: দামে খুশি কৃষক
বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে ভট্টা রোদে শুকাচ্ছেন কৃষক

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া: বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনটের চরাঞ্চলে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দামও বেশ সন্তোষজনক। চাষ হয়েছে গত বছরের চেয়েও দ্বিগুণ। এবার ফলন ও দাম ভালো থাকায় ভুট্টা চাষ করে চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক ফুটেছে।

 

এ মৌসুমে শুধু সারিয়াকান্দি উপজেলায় ৭ হাজার ৫১০ টন ভুট্টা উৎপাদন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই ভুট্টা ২৫৭ কোটি টাকায় বাজারে বিক্রি হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

 

স্থানীয় চাষিদের বরাতে জানা গেছে, সারিয়াকান্দির চরের চাষিদের বেশিভাগই এ সময়ে মরিচ চাষ করতেন। তবে চাষাবাদে পরিবর্তন আনায় এ মৌসুমে ব্যাপক হারে চাষ হয়েছে ভুট্টার। গত বছর এ উপজেলার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়েছিল। এবার সেখানে দ্বিগুণ, প্রায় ৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়েছে।

 

চালুয়াবাড়ী, কাজলা, বোহাইল, হাটশেরপুর, কর্ণিবাড়ী, চন্দনবাইশা ও সদর ইউনিয়নের চরের জমির আনাচে-কানাচে চাষ করা হয়েছে ভুট্টা। কোনো কোনো চরের ভুট্টার ফসল ছাড়া কোনো আবাদই চোখে পড়ছে না। চরগুলো ভুট্টার চরে পরিণত হয়েছে। যেদিকে তাকানো যায়, কেবলই চোখে পড়ছে সবুজ ভুট্টার গাছ। আবার কোনো জমিতে পাকা ভুট্টার মোচায় থরে থরে গাঁথা কেবলই সোনালি ভুট্টার দানার দেখা মিলেছে।

 

চাষিরা বলছেন, আগে ফসলাদি করে তেমন একটা লাভ থাকেনি। এ বছর ভুট্টার চাষ করে ফসলের লাভের মুখ দেখছি আমরা। বোহাইল ইউনিয়নের ধারাবারিষা গ্রামের চাষি আলাউদ্দিন সরকার বলেন, আবাদ করে লাভ না থাকায় জমি বর্গা দিয়ে সামান্য কিছু জমিতে অন্যান্য ফসলের চাষাবাদ করতাম। কিন্তু এবার চরের ২৫ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করে ফলন ও দাম দুটোই ভালো পেয়েছি। ভুট্টা ফসলেই ভালো লাভের মুখ দেখছি।

 

কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ছোনপাচা চরের চাষি ময়েজ উদ্দিন বলেন, ভুট্টা চাষে চরে অর্থনীতিতে এ বছর ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আমি ২৮ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছিলাম।

 

তিনি বলেন, এ ফসলে পরিশ্রম কম কিন্তু খরচ হয়েছিল প্রতি বিঘায় ১০ হাজার টাকার মতো। এরই মধ্যেই ভুট্টা জমি থেকে কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন পাচ্ছি ৪০ থেকে ৫০ মণ ভুট্টা। বাজারে বিক্রি করছি প্রায় ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ। আশা করছি, এ ফসলে ভালো লাভ থাকবে আমার।

 

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, এ মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দামও ভালো। চাষিদের উৎপাদিত ৭০ হাজার ৫১০ টন ভুট্টা বিক্রি করে ২৫৭ কোটি টাকা কৃষকের ঘরে উঠবে বলে আশা করছি আমরা।

 

এ চাষের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রায় ২২ হাজার কৃষক। ভুট্টার বাজারে এমন আশানুরূপ দাম থাকলে আগামীতে ভুট্টার চাষ আরো বেশি হবে বলে জানান তিনি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version