-->
শিরোনাম

শিবগঞ্জে ৩৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ: গাছে গাছে আমের মুকুল

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া
শিবগঞ্জে ৩৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ: গাছে গাছে আমের মুকুল
শিবগঞ্জের একটি আমগাছে সদ্য প্রস্ফুটিত আমের মুকুল

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া: বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলাসহ সব উপজেলায় গাছে গাছে আমের মুকুলের সমারোহ লক্ষ্য করা গেছে। এ অঞ্চলের এমন কোনো আমের গাছ নেই, যে গাছে কমবেশি মুকুল আসেনি! প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় প্রায় ৬০০ বছরের পুরোনো ফল আমের গাছে এবার বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে।

 

শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুধু এ উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ করা হয়। উপজেলাজুড়ে লক্ষাধিক আমের গাছ ও ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫-২০টি আমের বাগান রয়েছে। আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমগাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা।

 

এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে। হিমসাগর, চোষা, বউ সোহাগী, ল্যাংড়া, নাগ ফজলি, আলতাপেটি, রানি পছন্দ, দুধ সর, আম্রপালি, ল²ণভোগ, মল্লিকা, মিছরি দানা, ফজলি ইত্যাদি জাতের আম চাষ হয় এ অঞ্চলে।

 

সরেজমিনে আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন এবার। তবে এই সময়ে এক দফা হালকা বৃষ্টি হলে আমের জন্য সবচেয়ে উপকার হবে।

 

তাদের মতে, এ উপজেলার সর্বত্র আমের মুকুল দেখা গেলেও দেউলী, সৈয়দপুর, বুড়িগঞ্জ, বিহার, কিচক, আটমূল, শিবগঞ্জ সদর ও ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে আমগাছের পরিমাণ বেশি। এসব এলাকার কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আমগুটি। বাগান মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

 

উপজেলার জামতলি এলাকার আমচাষি জনাব আলী বলেন, আমার আম্রপালি জাতের ১০টি গাছই মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

দহিলা গ্রামের আমচাষি সোলায়মান বলেন, আমার ৮টি আম গাছে এবার আগেভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি।

 

বগুড়া জেলার সব উপজেলায় আমগাছে মুকুল শোভা পাচ্ছে এখন। জেলায় বাণিজ্যিকভাবে আম চাষের পাশাপাশি প্রায় বাড়িতেই নিজেদের মতো করে পছন্দসই কলম কাটা আমগাছ রয়েছে এ অঞ্চলের সর্বসাধারণের।

 

শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার জানিয়েছেন, শিবগঞ্জের গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছে মুকুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।

 

জেলা কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, বরাবারের তুলনায় এবার বগুড়া জেলায় মৌসুমি ফল আমের ফলন বেশি হবে। কারণ, এখন কলম কাটা আমগাছে খুব অল্প সময়ে আম ধরে, তাই এ এলাকার শহর-বন্দর-নগর-গ্রামেগঞ্জে আমগাছের পরিমাণ অনেক বেড়েছে।

 

সুতরাং ঝড়বৃষ্টির কবল থেকে রক্ষা পেলে এ জেলার আমে চাহিদা মেটানো সম্ভব।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version