ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহুবিধ সমস্যা ও অব্যবস্থাপনা বিদ্যমান। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রত্যাশিত সেবা না পেয়ে প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র রোগীরা বেশি টাকা দিয়ে বাইরে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, লোডশেডিংয়ের সময় জরুরি সেবার জন্য ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিঁড়ির নিচে একটি জেনারেটর চালু করা হয়। কিন্তু তিন বছর পরই তা নষ্ট হয়ে গেলে সেটি আর মেরামত করা হয়নি। পরে সরকার দুটি আইপিএস দেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেগুলোও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এ অবস্থায় লোডশেডিং হলে মোবাইল ফোনের আলোয় চলে জরুরি বিভাগের অপারেশন ও চিকিৎসাসেবা।
সরেজমিন জানা যায়, গোডাউন না থাকায় টিকাসামগ্রী আউটডোরের খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে এবং দোতলার পুরুষ ওয়ার্ডে রোগীদের পাশেই রাখা হয়েছে বস্তা ও অব্যবহৃত মালামাল।
হাসপাতাল কম্পাউন্ডের ভেতর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও), আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ও অন্য কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত কোয়ার্টার থাকলেও টিএইও, আরএমওসহ কেউই সেখানে বাস করেন না।
তারা বাইরে বাসা নিয়ে থাকেন। ফলে দুপুরের পর, বিশেষ করে রাতের বেলা হাসপাতাল কম্পাউন্ড নিরাপত্তাহীন থাকে। আবার হাসপাতালের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য অন্তত ১০ জন নিরাপত্তাকর্মীর প্রয়োজন থাকলেও আছেন মাত্র একজন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী চারজনের জায়গায়ও আছেন মাত্র একজন।
হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসকরা কে কখন আসেন-যান, কার কখন ডিউটি সে ব্যাপারে কারো জবাবদিহি নেই। বায়োমেট্রিক হাজিরার ব্যবস্থা থাকলেও চিকিৎসকদের অনেকে যথাসময় উপস্থিত হয়েও হাজিরা দেন না। আবার হাজিরা দিলেও কিছুক্ষণ সেবা দিয়েই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাইরে রোগী দেখতে চলে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, ডিজিটাল হাজিরার ব্যবস্থা থাকলেও ডাক্তারদের অনেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে চান না। তাঁরা ইচ্ছামতো আসা-যাওয়া করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান বলেন, ‘শুধু নেগেটিভ লিখলে হবে? পজিটিভ দিকটাও তুলে ধরেন।
আগের চেয়ে হাসপাতালের অনেক উন্নতি হয়েছে।
এ ছাড়া বিদ্যমান সমস্যাগুলো বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য