জয়পুরহাটের ৫ উপজেলার হাটবাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি সজনে ডাটার প্রচুর আমদানি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার সজনে ডাটার উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে। ফলে হাটবাজারে প্রচুর পরিমাণে উঠছে সজনে ডাটা।
বর্তমানে হাট-বাজারে চাহিদার পাশাপাশি এর দামও বেশি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গাছে গাছে প্রচুর সজনে ডাটা ধরেছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত রাস্তার পাশে, ঘরের আনাচে কানাচে, প্রতিটি গাছে ঝুলছে সজনে ডাটা।
এক সময় বাড়ির আশপাশের সীমানায় সজনের গাছ লাগানো হতো। তবে সময় পরিক্রমায় এবং চাহিদা থাকায় কৃষকরা ফসলি জমিতে সজনের চাষ করছেন। পরিকল্পিতভাবে সজনের চাষ করে লাভবানও হচ্ছেন।
স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনে ডাটার চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। জয়পুরহাটে সজনে ডাটা বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয় বলে জানা যায়।
মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে হাটবাজারে এর দাম কমে এসেছে। বর্তমানে পাইকারি ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে সজনে ডাটা।
নতুনহাট বাজারের কাঁচা তরকারি বিক্রেতা বাবু বলেন, মৌসুম শুরুতে এ বছর ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে সজনে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সজনের ডাটা। আমদানি বেশি ও বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে।
পাইকারি বিক্রেতা রবিয়ুল আলী বলেন, সজনে ডাটার দেশের সব অঞ্চলে এর চাহিদা রয়েছে। আমি প্রতিবছর সজনে ডাটা চট্টগ্রাম-ঢাকা, নাটোর, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করে থাকি। জয়পুরহাট অঞ্চলে ব্যাপক সজনে ডাটার গাছ আছে। এ বছর ঝড়-বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে সজনে ডাটার ফলন বেশি। গত বছরের তুলনায় এ বছর লাভ বেশি হচ্ছে।
সজনে বিক্রি করতে আসা কৃষক জাকির হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। এ সময় তিনি বলেন, সজনে চাষ করা অন্য গাছের চেয়ে সহজ, কারণ সজনের গাছের ডাল থেকে নতুন গাছের সৃষ্টি হয়। এ বছর ডাল রোপণ করলে আগামী বছর গাছে ফলন হয়। বাড়তি খরচ হয় না। বাড়িতে বড় ৪-৫টা গাছ থাকলে বছরে ৭-৮ হাজার টাকা আয় করা যায়।
আমার বাড়িতে ৬টা গাছ আছে। ফলনও বেশি হয়েছে। শুরুতে ভালো দাম পেয়েছি। এখনো দুইটা গাছে সজনে আছে। এই দাম থাকলেও ৪ হাজার টাকা বেচতে পারব। যদি বাণিজ্যিকভাবে সজনে ডাটা চাষ করা যায়। তাহলে এটি কৃষিতে অনেক সাফল্য বয়ে আনবে। একই সঙ্গে অর্থনীতে অনেক ভূমিকা রাখবে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. রাহেলা পারভীন বলেন, সজনে একটি ডাটা জাতীয় সবজি হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে। এটি বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। সজনের ডাটায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন উপাদান রয়েছে।
সজনে চাষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা না থাকলেও এটি জয়পুরহাটসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক উৎপাদন হয়। এই এলাকা থেকে সজনে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করে চাষি ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য