-->

নান্দাইলে ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দিয়ে প্রভাবশালীদের মাছ চাষ

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
নান্দাইলে ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দিয়ে প্রভাবশালীদের মাছ চাষ
নান্দাইলে ব্রহ্মপুত্র পুরাতন নদে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে এভাবেই মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা

নান্দাইলে ব্রহ্মপুত্র পুরাতন নদে স্থানীয় জেলেরা এক সময় জাল ফেলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। আর সেই নদের প্রবাহ আটকে তিন বছর যাবৎ মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা। ফলে দুই শতাধিক জেলে নদে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে না। বাঁধটি উপজেলা থেকে ১৭ কিলোমিটার পশ্চিমে খারুয়া ইউনিয়নের হাটশিরা মৌজার কালিবাড়ি চরে।

 

স্থানীয়রা জানান, খারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল মল্লিক, মুত্তুক মল্লিক, ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিনসহ ৭ জন প্রভাবশালী নেতা নদে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। তারা নিজেদের শক্তিশালী করতে আরো ৫০ জনের মত ব্যক্তিকে অংশীদার করে প্রায় তিন বছর ধরে মাছ চাষ করছেন।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখায় চরকালীবাড়ি এলাকায় নদীতে বাঁশ ও জাল দিয়ে আড়াআড়িভাবে প্রায় ৫শ ফুট লম্বা বাঁধ দেয়া হয়েছে। নদের আঁধা কিলোমিটার পর্যন্ত তিনটি বাঁধ দেয়া রয়েছে। বাঁধের ভিতরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা জালাল মল্লিকের নেতৃত্ব এক প্রভাবশালী মহল মাছ চাষ করেছে।

 

প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার মাছ বিক্রি করে টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেন। চরকালীবাড়ি ও চরমসলেন্দর গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক জেলে পরিবার মাছ শিকার করতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। নদে মাছ শিকার করতে আসলে প্রভাবশালীদের মারধর ও হয়রানির শিকার হয়েছে বলেও জেলেদের অভিযোগ।

 

জেলে প্রমোদ চন্দ দাস বলেন, আমাদের সরকার জেলে কার্ড দিছে। বাপ দাদা এই নদীতে মাছ ধরছে। আমরাও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। কয়েক বছর ধরে দেখি প্রভাবশালীরা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করেছে। এখন তো মাছ ধরাই বন্ধ। প্রভাবশালীদের হাত থেকে নদী রক্ষা করে আমাদের মাছ ধরার সুযোগ করে দিলে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।

 

খারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল মল্লিক জানান, ‘নদীর আশপাশে সব জায়গা আমাদের। নদী তো এমনেতেই পইর‌্যা থাকে তাই গ্রামের মানুষজন নিয়ে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করেছি।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মাছ চাষ তো আমরা একলা করি না। স্থানীয় ৫০ জনের মতো অংশীদার আছে। মাছ মেরে সবাইকে দিয়ে খাই।

 

খারুয়া ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা ফারুক শিকদার বাঁধ নির্মাণ আমার চোখে পড়েছে। আমি তাদেরকে বলেছি তারা আমার কথা শোনেননি।

 

নান্দাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এটিএম আরিফ বলেন, ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বাঁধ সরানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

 

দ্রুত বাঁধ না সরালে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version