-->
শিরোনাম
সীতাকুন্ডে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব 

বাজারে দেশীয় মাছের আকাল, পানি শূন্যতায় ধুঁকছে কৃষিজমি

সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
বাজারে দেশীয় মাছের আকাল, পানি শূন্যতায় ধুঁকছে কৃষিজমি
হাইব্রিড জাতের মাছে সয়লাব সীতাকুন্ডের বাজার

সীতাকুন্ডে মুক্ত জলাশয় বা বিলের বাহারি জাতের মাছ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মাছের প্রাকৃতিক উৎপাদন কমে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

 

প্রাকৃতিক বৈরী আবহাওয়া আর অপরিকল্পিত নগরায়ন শিল্পায়নের প্রভাব পড়ছে ফসল উৎপাদন আর মাছ চাষের ওপর। ফলে মুক্ত জলাশয়ে আর মিলছে না সুস্বাদু দেশীয় মাছের দেখা।

 

কৃষিতে অধিক ফলনের আশায় মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ এবং চায়না দোয়ারি জালের দাপটে উজাড় হচ্ছে রেনু পোনা। এতে স্থানীয় হাটবাজারে খুব কমই দেখা মিলছে চিরচেনা দেশীয় প্রজাতির মাছ। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে বিশেষ করে কৈ, শিং, মাগুর, বোয়াল, পাবদা, টেংরা, সরপুটি, টাকি, চিতল, আইর, শোল, বাইম ও মলার মতো সুস্বাদু মাছ আগের মতো আর চোখে পড়ে না।

 

সামুদ্রিক বা পুকুরে চাষ করা হাইব্রিড জাতের মাছে সয়লাব বাজার। যেসব পুকুরে এক সময় দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত সেসব পুকুরে এখন বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের মাছ চাষ হচ্ছে। ফলে মিঠা পানির দেশীয় প্রজাতির মাছের স্থান দখল করছে পুকুরে উৎপাদিত হাইব্রিড মাছ। হাটবাজারগুলোতে এখন বেশি দেখা যাচ্ছে নাইলোটিকা, পাঙ্গাসসহ পুকুরে উৎপাদিত কার্প জাতীয় হাইব্রিড মাছ।

 

ইদিলপুরের বাসিন্দা পৌরসদরের ব্যবসায়ী মো. আলা উদ্দিন জানান, বর্ষা মৌসুমে এলাকার অধিকাংশ খাল বিল পানিতে তলিয়ে যেত। তখন ছোট-বড় সব নালা, খাল-বিল পানিতে ভরপুর থাকত। জলবায়ুর পরিবর্তনে এবার চাহিদা মতো বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে খাল-বিলগুলোতে আসেনি পর্যাপ্ত পানি। যার প্রভাব কৃষি ছাড়াও পড়ছে দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদনে। ফলে বিলের ওপর নির্ভরশীল কৃষি ও মৎস্যজীবীদের সংসার পরিচালনায় কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

 

পৌর সদরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ওয়াহিদ মুরাদ জানান, বাজারে এখন দেশীয় প্রজাতির মাছের আকাল চলছে। ক্রেতারা হন্যে হয় খুঁজেও দেশীয় প্রজাতির মাছ পায় না। সীতাকুন্ড বাজারের আড়তদার মো. লিয়াকত আলী (লাতু) জানান, সিলভার কার্প, পাঙ্গাশ ছাড়াও পুকুরে চাষ করা রুই, কাতলা, মৃগেল, মাগুর, মলা, সরপুটি, নাইলোটিকা, শোল, কৈ ও টাকি মাছ স্থানীয় চাষিদের কাছে ক্রয় করে পাইকারি বাজারে বিক্রয় করেন।

 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, দেশীয় প্রজাতির বেশকিছু মাছ পুকুরে চাষ হয়। তবে পরিমাণ খুবই স্বল্প, দামে বেশি। অপরিকল্পিত নগরায়ন শিল্পায়ন ও জলাশয় ভরাটে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছের বিচরণ ক্ষেত্র। যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে।

 

উপজেলা মৎস্য অফিস দেশীয় সুস্বাদু মাছ সংরক্ষণে চাষিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version