-->
শিরোনাম

সীতাকুন্ডে চাষ হচ্ছে মেক্সিকোর সুপারফুড চিয়া সিড

সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সীতাকুন্ডে চাষ হচ্ছে মেক্সিকোর সুপারফুড চিয়া সিড
সীতাকুন্ডের মাটিতে বেগুনি রংয়ের ফুলে ফুলে দোল খাচ্ছে চিয়া সিড

চিয়া সিড দেশীয় কোনো ফসল নয়। দেখতে সাধারণত তিলের মতো চিয়া সিড মূলত ঔষধীগুণ সম্পন্ন একটি উদ্ভিদ। মেক্সিকোর অন্যতম পুষ্টিকর ফসল চিয়া সিডের চাষ হচ্ছে এখন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, দেশের কয়েকটি জায়গায় এ সুপারফুড ও পুষ্টিকর ফসলটির চাষাবাদ শুরু হলেও উপজেলার মধ্যে সীতাকুন্ডে সর্বপ্রথম এটি পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করা হয়েছে।

 

মুরাদপুরের চাষি মো. সেলিম উদ্দিন এ সিয়া সিডের প্রথম চাষাবাদ শুরু করেছেন। শুরুতেই ভালো ফসল উৎপাদন হওয়ায় আরো বৃহৎ আকারে চাষাবাদের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। ইউরোপসহ মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার মরু অঞ্চলে এ ফসলটি বেশি জন্মায়। ফসলটির বীজ দেখতে বাদামি, কালো ও সাদা রংয়ের। আকারে ছোট এ ফসলটি অনেকটা দেখতে তিলের মতো।

 

চিয়া সিডকে পুষ্টিবিদরা সুপারফুডও বলে থাকেন। কারণ ফসলটিতে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ। বিশ্বব্যাপী অনেকটা চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে চিয়া সিড। প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। পুষ্টিগুণে কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, মুরগির ডিমের চেয়ে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে চিয়া সিডে।

 

এছাড়া ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে এর বীজ। এটি নিয়মিত পানে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। ভিন্ন দেশের মাটির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের মাটিতে বেগুনি রংয়ের ফুলে ফুলে মাঠে দোল খাচ্ছে চিয়া সিড উদ্ভিদটি। দেশীয় ভূমিতে আবহাওয়া-জলবায়ু উপযোগী হওয়ার সুবাদে আশার আলো দেখাচ্ছে কৃষি উদ্যোক্তাদের।

 

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশের মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে পুষ্টিকর খাবার চিয়া সিড বীজের চাষ হলে লাভবান হবে কৃষি পরিবারগুলো। এদিকে নতুন এ ফসল চাষবাদের খবর পেয়ে সরেজমিন উপজেলার মুরাদপুরের কৃষক মো. সলিম উদ্দিনের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, চিয়া সিডের ফলেফুলে পুরো জমি ভরে উঠেছে।

 

তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ৪ শতক জমিতে আমি প্রথমবারের মতো এ ফসল চাষাবাদ করি। এতে ফলন খুব ভালো হয়েছে। বাজারে দামও ভালো এবং চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। আশা করছি এপ্রিলের শেষের দিকে ফসল কাটা শুরু হবে। তিনি আরো জানান, যেহেতু ফলন ভালো হয়েছে, সেহেতু আগামীতে আরো ব্যাপক পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে চিয়া সিডের চাষ করার ইচ্ছা রয়েছে।

 

সীতাকুন্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমিতে ঔষধীগুণ সম্পন্ন এ উদ্ভিদ বেশি জন্মায়। তবে দেশের কয়েকটি জায়গায় লাভজনক ফসল চিয়া সিডের বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়নে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ঔষধীগুণে ভরা পুষ্টিকর খাবার চিয়া সিড বীজের চাষ হয়েছে।

 

এখানকার আবহাওয়া ও ভূপ্রকৃতি চিয়া সিড চাষের উপযোগী। তাই প্রথম চাষেই ফলনও খুব ভালো হয়েছে। আমরা অন্য কৃষকদের উৎসাহিত করছি, যেন তারাও বাণিজ্যিকভাবে চিয়া সিডের চাষ শুরু করেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version