-->
শিরোনাম

তীব্র গরমেও বগুড়ার মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

এনামুল হক রাঙ্গা বগুড়া
তীব্র গরমেও বগুড়ার মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড়
বগুড়ার নিউমার্কেটের একটি দোকানে পছন্দের শাড়ি দেখছেন ক্রেতারা

আর মাত্র কয়েক দিন পরেই বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের আনন্দের পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর এ ঈদকে ঘিরে বগুড়ার মার্কেটগুলোতে জমে উঠেছে সব বয়সি মানুষের কেনাকাটা। প্রতিদিনই মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন শহরের বিভিন্ন মার্কেটে। যার যার পছন্দের কাপড় সাধ্য অনুযায়ী কিনছেন তারা।

 

ঈদে উচ্চবিত্তরা ছুটছেন বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলার শোরুমগুলোতে, মধ্যবিত্তরা নিউমার্কেট ও নবাববাড়ী সংলগ্ন আল-আমীন সুপার মার্কেট ও শেখ সরিফ সুপার মার্কেট আর স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ছুটছেন হর্কাস মার্কেটে। এছাড়া জুতার দোকানগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

 

শহরের মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, জামাকাপড়ের মধ্যে এবার নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে নায়রা। এরপর সায়রা ও অরগাঞ্জা। দেশি এবং ভারতের প্রতি পিচ নায়রা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও দেশীয় কাপড়ের পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের হরেক নামে বিক্রি হচ্ছে বাহারি পোশাক। শহরের সব মার্কেটেই বিক্রি করা হচ্ছে নায়রা। নিউমার্কেটের দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে বাহারি রকমের শাড়ি। জলেশ্বরীতলা অভিজাত বিপণীতে বিক্রি হচ্ছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, প্যান্ট-শার্ট, টি-শার্ট, ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক।

 

দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। মার্কেটগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদ উপলক্ষে শপিংমল এবং মার্কেটগুলো আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো হয়েছে। শপিংমলসহ শহরের কোথাও যাতে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য জেলা-পুলিশ শুক্রবার থেকেই ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা প্রদান করে আসছে।

 

বগুড়া শহরের নিউমার্কেট, জলেশ্বরীতলা, রানার প্লাজা, পুলিশ প্লাজা, আলতাফ আলী মার্কেট, আলামিন কমপ্লেক্স, হকার্স মার্কেট ও অস্থায়ী হকার্স মার্কেটগুলোতে শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা। ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কাপড় বিক্রেতা থেকে শুরু করে কসমেটিক্স দোকান গুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

 

বিক্রেতারা জানান, এবারের ঈদ বাজারে নারীদের নতুন পোশাক নায়রা, সায়রা এবং অরগাঞ্জা। এছাড়াও বরাবরের মতো উন্নত মানের থাই, চাইনিজ, লেহেঙ্গা, থ্রি-পিচ, টপস, ওয়ান পিচসহ দেশীয় মানের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। বিলাসি ছেলেমেয়েরা এমনকি তাদের অভিভাবকরাও এসব দোকানে ভিড় জমাচ্ছে। ঠিক একই ভাবে কসমেটিক্স দোকান গুলোতে মেয়েদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ব্রান্ডের মেহেদীর চাহিদাই বেশি।

 

বরাবরের মতো এবারো প্রথম শ্রেণির ক্রেতাদের মূল টার্গেট হচ্ছে রানার প্লাজা, ও জলেশ্বরীতলা এলাকার বিপণীবিতানগুলোতে। শুধু যে শপিংমল এবং মার্কেটগুলোতেই ক্রেতাদের ভিড় তা নয়। ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে শহরের ফুটপাতের দোকান গুলোতেও।

 

মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেদের উপচে পড়া ভিড় এখানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দামে সস্তা হওয়ায় ফুটপাত গুলোতেও ক্রেতাদের বেশি ভিড়। অপর দিকে সস্তা মার্কেট হিসেবে পরিচিত হকার্স মার্কেট। এখানে অনেকটা সস্তায় কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। এই মার্কেটে সস্তায় থাই, চাইনিজ বা দেশীয় কাপড় বিক্রি হচ্ছে। আর সে জন্য ধনি-গরিব সকলেই এইসব মার্কেটে ভিড় জমাচ্ছেন।

 

এছাড়াও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলামের আয়োজনে শহরের শহীদ খোকন পার্কে অস্থায়ী হকার্স মার্কেট বসানো হয়েছে। সেখানেও ঈদের কেনাকাটা চলছে। শহরের রানা প্লাজার ব্যবসায়ী মহিদুল ইসলাম জানান, জামাকাপড়ের মধ্যে এবার নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে নায়রা, সায়রা এবং অরগাঞ্জা।

 

এছাড়াও রয়েছে লেহেঙ্গা, থ্রি-পিচ, টপস, ওয়ান পিচসহ দেশি ও ভারতীয় বিভিন্ন ধরনের পোশাক। দেশি ও এবং ভারতীয় প্রতি পিচ নায়রা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত। বেচাকেনা বেড়েছে। ক্রেতারা তাদের সাধ্য অনুযায়ী ঈদের কেনাকাটা করছেন।

 

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আখতার জানান, শপিংমলসহ শহরের কোথাও যাতে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য জেলা পুলিশ ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা প্রদান করছে। জেলা শহরসহ জেলার ১২টি উপজেলার জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করতে পারেন সেজন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

বগুড়া শহরের সাতমাথা, থানা মোড়, সেলিম হোটেলের সামনে, জলেশ্বলীতলা, চেলোপাড়া, নিউমার্কেট, রানা প্লাজা, নবাববাড়ী সড়ক এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও লিচুতলা থেকে মাটিডালি পর্যন্ত ঈদে সাধারণ মানুষ যেন সহজেই ঘরে ফিরতে পারে সেজন্য নিরাপত্তাসহ যানজট নিরসনে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ কাজ করছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version