-->
শিরোনাম

ঘোড়াঘাটে ঝরে যাচ্ছে লিচুর ফুল, লোকসানের শঙ্কায় চাষি

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
ঘোড়াঘাটে ঝরে যাচ্ছে লিচুর ফুল, লোকসানের শঙ্কায় চাষি
শুকিয়ে যাওয়া ফুলগুলো গাছ থেকে ভেঙে দিচ্ছেন লিচু চাষি

মৌসুমের শুরুতে লিচু গাছে প্রচুর পরিমাণ ফুল থাকলেও এখন যেন ফুলশূন্য পুরো বাগান। গাছের ফুল শুকিয়ে মাটিতে পড়ে আছে। এমন চিত্র দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায়। ছোট কিংবা বড়, সব বাগানেই মুকুল ঝরে যাচ্ছে। এতে লোকসানের শঙ্কায় লিচু চাষিরা।

 

এ বছর এই উপজেলায় লিচু গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। বাম্পার ফলনের আশায় ছিলেন চাষিরা। কিন্তু হঠাৎ লিচুর ফুল শুকিয়ে পড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। শুরু থেকে পর্যাপ্ত পরিচর্যা করার পরও ঝরে যাচ্ছে লিচুর ফুল। লিচুর জন্য বিখ্যাত দিনাজপুর জেলা। এ জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় চাষ হয় প্রচুর পরিমাণ লিচু। বিশেষ করে চায়না থ্রি, বোম্বাই ও মাদ্রাজি জাতের লিচু এই উপজেলায় বেশি চাষ হয়।

 

লিচুর রাজধানীতে ফুল ঝড়ে যাওয়ায় এ বছর উৎপাদন কম হবে বলে অভিমত লিচু চাষিদের। এ উপজেলার বাগানগুলো ঘুরে দেখা যায়, চায়না থ্রি ও বোম্বাই জাতের লিচু গাছের নিচে মাটিতে বিছিয়ে আছে শুকনা লিচুর ফুল। এসব ফুল গাছ থেকে শুকিয়ে ঝড়ে পড়ে গেছে। এসব জাতের অধিকাংশ গাছ প্রায় ফুল শূন্য।

 

কিছু কিছু গাছে লিচুর সামান্য ফুল এবং গুটি ধরে আছে। লিচুর ফুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আবহাওয়া জনিত সমস্যাকে দায়ী করছেন কৃষি বিভাগ। তারা বলছে, আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে যথাযথ ভাবে পরাগায়ন না ঘটায় লিচুর ফুল ঝরে যাচ্ছে।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কার্যালয়ের তথ্য বলছে, এ উপজেলায় মোট চাষযোগ্য জমি ১২ হাজার ১৮৪ হেক্টর। তার মধ্যে শুধুমাত্র লিচুর চাষ হয় ৬৩ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় লিচু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০৪ টন। ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বাসস্ট্যান্ডে ৩ বছরের জন্য একটি লিচুর বাগান লিজ নিয়েছেন স্থানীয় রোকনুজ্জামান রোকনু।

 

তিনি বলেন, এ বছর গাছে যে পরিমাণ ফুল এসেছিল। তা অকল্পনীয়। তবে সব ধরণের পরিচর্যা করার পরও, অধিকাংশ ফুল ঝড়ে গেছে। বাগানের অধিকাংশ গাছে ফুল ও গুটি নেই বললেই চলে। ওসমানপুরে লিচুর চাষ করেছেন হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, এ বছর পানি দেয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে এবং শ্রমিকের মজুরি দেয়াতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে। তা লিচু বিক্রি করে তোলা সম্ভব না। আমরা লোকসানে পড়ে গেলাম।

 

ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, যে সময় ফুলে পরাগায়ন ঘটে সে সময় আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে সঠিক ভাবে পরাগায়ন ঘটতে পারেনি। কুয়াশা, বৃষ্টি এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা এর একমাত্র কারণ। ফলে লিচুর ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে।

 

অবশিষ্ট ফুল রক্ষায় আমরা চাষিদের সব ধরণের পরামর্শ ও সহযোগীতা প্রদান করে যাচ্ছি। এখনো গাছে যেটুকু ফুল আেছে, তাতে আশা করছি আমরা লিচুচাষে কাক্সিক্ষত লক্ষমাত্রা অর্জন করতে পারব।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version