ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের সড়ক ও ফুটপাতে দোকানে বসিয়ে ভাড়া নিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সড়ক দখল করে বিভিন্ন পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। এ কারণে শহরমুখী সড়কের ফুটপাত দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছেন না পথচারীরা। শহরমুখী সড়কটি ফোর লেনে উন্নতি করা হলেও সুবিধা থেকে বঞ্চিত নগরবাসীরা।
সম্প্রতি পুলিশের পক্ষ থেকে যানজট নিরসনে ফুটপাত মুক্ত করতে হকারদের উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের কিছু দিনের মধ্যেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের ক্ষমতা দেখিয়ে ফুটপাত দখলে নেয় হকাররা।
জানা গেছে, যানজট নিরসনে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেউথা এবং শহরমুখী সড়ক ফোর লেনে উন্নতি করা হলেও সড়ক ও ফুটপাতে হকারদের দোকান বসানোর বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, পৌর সুপার মার্কেটের সামনে এবং বাসস্ট্যান্ডের ফুটপাত এখন হকার ও স্থানীয় কিছু চাঁদাবাজের আয়ের উৎস। ভ্যান গাড়ির মাধ্যমে একেকজন হকাররা তাদের দোকান বসিয়েছে। আর একেকটি ভ্যান গাড়ি থেকে এককালীন ৫ হাজার এবং মাসে ২ হাজার পর্যন্ত সালামি নেয় প্রভাবশালীরা।
একই সঙ্গে বাসস্ট্যান্ডের ফুটওয়ার ব্রীজের নিচে দোকান বসিয়ে নেয়া হচ্ছে ১০ হাজার আর মাসে ভাড়া বাবদ ৫ হাজার টাকা। ফুটপাত-সড়ক দখল করে দোকান বসিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।
সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের বাসস্ট্যান্ডে রাজ হোটেলের সামনের ফুটপাত ও সড়ক হকারদের দখলে। পিটিআই স্কুলের গেটের সামনে থেকে শুরু করে উপজেলা গেইট পর্যন্ত ঢাকা আরিচা মহাসড়কের ফুটপাত দখলে রয়েছে। শহরমুখী সড়কের বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতাল গেইট পর্যন্ত সড়ক হকারদের দখলে রয়েছে।
শহরমুখী এই সড়কে পাশে রয়েছে অসংখ্য প্রাইভেট হাসপাতাল আর হকারদের দোকানের কারণে সারাদিনই থাকে যানজট। সন্ধ্যা হলে যানজট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ পথচারীদের। সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ এসব দোকানে হরেক রকমের খাদ্যদ্রব্য ও পণ্য বেচাকেনা চলছে।
মোসলেম নামের এক পথচারী বলেন, সড়ক বড় হওয়ায় হকারদের সুবিধা হয়েছে। সাধারণ পথচারীদের ভোগান্তি রয়েই গেছে। বাসস্ট্যান্ড থেকে হ্যালো বাইকে উঠলে হকারদের ভ্যান গাড়ির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে যেতে হয়। হেঁটে যাওয়ার তো কোন সুযোগই নেই।
নিলু নামের এক ডিমের দোকানদার বলেন, আমি ছোট একটা ভ্যান গাড়ি করে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করতাম। নেতারা এককালীন ৫ হাজার আর মাসে ২ হাজার টাকা ভাড়া চেয়েছে। আমি ৩ হাজার দিতে চেয়েছিলাম। গাইবান্ধা আর ভীনদেশী লোক এসে নেতাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিয়ে ব্যবসা করছে। আমরা মানিকগঞ্জের মানুষ আমাগো কোন সুযোগ সুবিধা নেই।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, আমরা নিয়মিত ফুটপাতে অভিযান চালাচ্ছি। একদিক দিয়ে অভিযান করি, অন্য দিক দিয়ে হকাররা ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। আমােদর অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, সড়ক বা রাস্তা হকারদের জন্য নয়। সড়ক জনগণ চলাচলের জন্য। যদি কেউ সড়কে জনগণের চলাচলে বিঘœ ঘটায়। তাদের বিরুদ্ধে আইনুনগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য