-->

সিলেটে ইফতার-সেহরি দুইবেলাই লোডশেডিং

সিলেট ব্যুরো
সিলেটে ইফতার-সেহরি দুইবেলাই লোডশেডিং

সিলেটে ইফতার-সেহরি দুইবেলাই লোডশেডিং চলছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় অর্ধেক সময়ই এখানে বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে ক্ষুব্ধ সিলেটের সাধারণ মানুষ। কোথাও কোথাও আবার বিদ্যুতের এমন আসা-যাওয়া খেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে।

 

এদিকে, বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। দ্রুত বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এক কথায় বলা যায়, এই লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষোভে ফুঁসছেন সিলেটের বাসিন্দারা।

 

সিলেট মহানগরের শাহপরাণ থানার বটেশ্বর এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম মাহফুজ রুয়েল বলেন, ১০-১২ দিন ধরে প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। এমনকী ইফতার এবং সেহরির সময়ও লোডশেডিং হওয়ায় চরম বিপাকে আছি। এ ধরনের ঘনঘন লোডশেডিং নিকট অতীতে হয়নি।

 

এদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বিপাকে আছেন ব্যবসায়ীরাও। ঈদবাজারের এই সময়ে লোডশেডিংয়ের কারণে ঈদের কেনাকাটায় লোকজন গরমের জন্য দিনের বেলা মার্কেটে আসছেন কম। এছাড়া জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে নগরজুড়ে শব্দ দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। জ্বালানি তেলের দামও চড়া। এ অবস্থায় দিনে ৮/৯ ঘণ্টা জেনারেটর চালিয়ে ব্যবসা করে আয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে বিদ্যুতের এই সংকট দ্রুত সমাধান করা উচিত।

 

ঘনঘন লোডশেডিং প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বলেন, দেশে তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় এবং ঈদের সময় পুরো রাতই বিপণিবিতানগুলো খোলা রয়েছে। এতে চাহিদাও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। যার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুত এর একটা সমাধান হবে।

 

তিনি বলেন, সিলেট বিভাগে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা ৭৪০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে আমরা পাচ্ছি ৫৪০ মেগাওয়াট। ২০০ মেগাওয়াটের মতো ঘাটতি আছে। এছাড়া সিলেট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৭০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে আজ আমরা পেয়েছি ৮৭ মেগাওয়াট। যার কারণে বাধ্য হয়েই প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

 

আব্দুল কাদির বলেন, বুধবার (১৯ এপ্রিল) থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। বন্ধ হয়ে যাবে অফিস-আদালত। তখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। এদিকে, গত রোববার দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে সিলেট নগরের নয়সড়ক এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

 

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, এলাকায় রোববার ইফতারের আগ থেকেই বিদ্যুৎ ছিল না। বিদ্যুতহীন অবস্থায় তারা ইফতার করেছেন এবং তারাবির নামাজ পড়েছেন। পরে রাত ১১টার দিকে বাধ্য হয়ে তারা সড়ক অবরোধ করেছেন। তবে অবরোধ শুরু হওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে আসায় তারা সড়ক থেকে সরে যান।

 

গ্যাস-বিদ্যুৎ গ্রাহক কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহব্বায়ক সিনিয়র আইনজীবী নাসির উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ন আহব্বায়ক ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও সদস্য সচিব মকসুদ হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, গত ১৪ এপ্রিল থেকে সিলেট নগরীতে বিদ্যুতের মাত্রারিক্ত লোডশেডিংয়ে নগরবাসী অতিষ্ঠ ও ক্ষুব্ধ। গ্রীষ্মের এই প্রচন্ড গরমের সময় পবিত্র রমজান মাসে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

 

লোডশেডিংয়ের ফলে এসএসসি পরীক্ষার্থী, শিশু, রোগী ও বয়োবৃদ্ধরা কষ্ট পাচ্ছেন বেশি। রমজান মাসের শুরুতে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ধর্মপ্রাণ জনগণ বিদ্যুৎ বিভাগের ওপর খুশি ছিলেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version