-->

কুমিল্লায় গাছে গাছে হোনালু ফুলের নান্দনিক সাজ

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় গাছে গাছে হোনালু ফুলের নান্দনিক সাজ
হোনালু ফুল

কুমিল্লা দক্ষিণাঞ্চলের সবকটি উপজেলাজুড়ে গাছে গাছে নান্দনিক সাজে ডালে ডালে ফুটেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবহনকারী হোনালু ফুল। এ অঞ্চলে হোনালু গাছ ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে পা বাড়ালেও বসন্তের শুরুতেই কিছু কিছু বাড়ির আঙিনায় কিংবা সড়কের পাশে ২-৪টি গাছে থোকা থোকা ফুলে ফুলে সেজে জানান দিচ্ছে গ্রামবাংলার বর্ণিল ছবি।

 

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানায়, আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনে এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে হোনালু গাছ ও ফুল যতটুকু আছে ততটুকু নিয়েই খুশি গাছের মালিকরা। কারণ হোনালু গাছ ও ফুল মানুষের অনেক উপকারে আসে। হোনালু গাছের কাঠ দিয়ে নানা ধরনের ফার্নিচার তৈরি এবং ফুল শরীরের নানা রোগে ব্যবহার কিংবা তার চাষনী-পায়েসসহ সুস্বাদু নানা খাবার তৈরি করে থাকেন। কিন্তু প্রযুক্তির যুগে ২-৪ বাড়ি ঘুরেও পাওয়া যায় না এ উপকারী গাছটি। পরিবেশ ও মানবকল্যাণে গাছটি সংরক্ষণে সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ কেউই গ্রহণ করেনি।

 

সূত্রগুলো আরো জানায়, জেলার দক্ষিণাঞ্চলের উপজেলাগুলোর সবকটি গ্রামে এবং আশপাশের গ্রামে গ্রামে বসন্তের শেষ সময় থেকে নববর্ষের আগমন ঘিরে গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণ হোনালু গাছের ডাটায় ডাটায় ফুল ফুটতে শুরু করে ফাল্গুন মাসজুড়ে তার নান্দনিক বাহারি সাজে সেজে থাকে এ গাছটি। গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে এ ফুলের চাহিদা বেশি। মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরা এ ফুল নানা খাবার তৈরিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। হাটবাজারজুড়ে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি হোনালু ফুল বিক্রি হয়ে থাকে। ফুলগুলো নানা গুণে ও স্বাদ বেশি হওয়ায় যেকোনো বয়সের মানুষের অনেক পছন্দ।

 

স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক জানায়, হোনালু ফুল সবজিতে ক্যালসিয়াম, খনিজ লবণ, আয়রন, প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্যের উপকরণ রয়েছে। এ ছাড়া ভিটামিন এ, বি ও সি সমৃদ্ধ হোনালু ফুল ও পাতা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে এ গাছটির ফুল ও পাতা ঔষধী উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে।

 

স্থানীয় পরিবেশবিদদের একাধিক সূত্র জানায়, মানবদেহের পুষ্টি ছাড়াও এ হোনালু গাছের পাতা ও ফুল পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, রক্তশূন্যতাসহ নানা কাজে উপকারী উপকরণ। কিন্তু এ গাছটি সংরক্ষণে কোনো সংস্থাও এগিয়ে আসছে না। মনে হচ্ছে প্রতিনিয়ত এ গাছটি বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা বন বিভাগ, কৃষি দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তর কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য

Beta version