-->
শিরোনাম

বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, দুশ্চিন্তা পুরোনো জাতের ধানে

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, দুশ্চিন্তা পুরোনো জাতের ধানে
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে সোনালি ধানের সমারোহ। রোদ আর বাতাসে ফসলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। মাঠগুলোতে ধান সবুজ বর্ণ থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষক তাদের ধান কেটে ফসল ঘরে তুলবে।

 

তবে যারা আগাম ধান রোপণ করেছেন, তারা ইতিমধ্যেই ধান কেটে ঘরে তোলা শুরু করেছেন। শুরুর দিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কৃষকরা বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। তবে সপ্তাহখানেক আগে তীব্র তাপদাহে কিছু কিছু ফসলের মাঠে ধানের শীষ সাদা বর্ণ ধারণ করে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন দু’একজন কৃষক।

 

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়াজনিত কোনো সমস্যা নয়, পুরোনো জাতের বিভিন্ন ধানে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তারা কৃষকদের পুরোনো জাত, বিশেষ করে ২৮ জাতের ধান চাষে নিরুৎসাহিত করছেন।

 

উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলায় বোরো ধানের চাষ হয়েছে ৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টন। এই উপজেলায় নতুন জাতের ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, উফসি-২৯ জাতের ধান বেশি চাষ হচ্ছে। এ ছাড়াও ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান অনেক কৃষক চাষ করেছেন।

 

মৌসুমের শুরুতে কৃষি বিভাগ সরকারি প্রণোদনার আওতায় ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আউশ ধানের বীজ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি এসব ধান চাষের জন্য কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও কীটনাশক বিতরণ করেছেন তারা।

 

উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের কৃষক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমার জমিতে ধান পাক ধরেছে। কয়েকদিন পরেই ধান কাটতে পারব। এবার ফসলের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।’

 

মোনাজ্জল হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘আমি ২ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আমার জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। তবে দাম ভালো পেলে লাভবান হবো।’

 

পৌর এলাকার বোরো চাষি লিটন মিয়া বলেন, ‘আমি ৪০ শতক জমিতে ২৮ জাতের ধান চাষ করেছি। হঠাৎ গত দুদিন আগে গিয়ে দেখি পুরো জমির সব ধানের শীষ সাদা হয়ে গেছে। পুরো লোকসানে পড়ে গেলাম।’

 

ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। বড় ধরনের ঝড়, বৃষ্টি অথবা শিলাবৃষ্টি না হলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৩০ থেকে ৪০ দিনের ভেতর কৃষক ধান ঘরে তুলতে পারবে। আমরা সবসময় কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছি।’

 

ধানের শীষ সাদা বর্ণ ধারণ করছে, এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘পুরোনো জাতের ধানগুলোতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে সাদা বর্ণ ধারণ করা অন্যতম। আমরা কৃষকদের নতুন নতুন জাতের ধান চাষে উৎসাহিত করছি।’

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version