-->
শিরোনাম

গরু পালন করে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন চরবাসী

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গরু পালন করে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন চরবাসী
গাইবান্ধার চরে গরু-বাছুরের ঝাঁক বিচরণ করছে

নদীবেষ্টিত গাইবান্ধায় জেগে ওঠেছে শতাধিক বালুচর। এসব চরের অধিকাংশ পরিবার দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন। এই দারিদ্র্যতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চরবাসী নানা ফসল ফলানোসহ প্রত্যেক বাড়িতে পুষছেন দেশি জাতের গরু। এ থেকে সুদিনের ছোঁয়া লেগেছে চরবাসীর ঘরে ঘরে। গরুসহ বিভিন্ন ধরনের গবাদিপশু পালন করে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন চরবাসী।

 

সম্প্রতি গাইবান্ধার এরেন্ডাবাড়ী, খাটিয়ামারী, রসুলপুর, কড়াইবাড়ী, কুন্দেরপাড়া, কালুরপাড়া ও তারাপুরসহ আরো বেশ কিছু চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি গরু-বাছুর, ছাগল, ভেড়াসহ বিভিন্ন গবাদিপশু রয়েছে। চরগুলোতে গরু-বাছুরের ঝাঁককে বিচরণ করতে দেখা গেছে। বালুর পতিত জমিতে প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা ঘাস গরুকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত সময় পার করছের গৃহস্থরা। বিশেষ করে আসন্ন কোরবানি ঈদ ঘিরে গরু মোটাতাজা করে এই খাত থেকে ভালো লাভের আশা করছেন তারা। আর সেই লাভ থেকে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন চরবাসী।

 

জানা যায়, গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা-যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা বালুচরগলোতে বাদাম, মিষ্টিকুমড়া, মরিচ, ভুট্টা, মিষ্টিআলুসহ নানা ধরনের ফসল ফলানো হচ্ছে। একই সঙ্গে গরু-বাছুর পালনেও ঝুঁকে পড়েছেন তারা। বাড়ি বাড়ি পুষছেন দেশি জাতের গরু। চরাঞ্চলে রয়েছে অসংখ্য কাঁশবনসহ পরিত্যক্ত ভূমি। এই ভূমিগুলোতে গরুকে ঘাস-লতা-পাতা খাওয়াতে পারেন তারা। এতে অল্প খরচে প্রতি বছর গরু বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করছেন এখানকার মানুষ। এমতাবস্থায় চরাঞ্চলের প্রত্যেক বাড়িতে ৫ থেকে ২০টি গরু-বাছুর দেখা গেছে। এখানে এমন কোনো বাড়ি নেই যে, সেখানে গরু কারো নেই।

 

কড়াইবাড়ী ও কুন্দেরপাড়া চরের বাসিন্দা নবির হোসেন, মরিয়ম বেগম ও আজগর আলী জানান, কয়েক বছর ধরে দেশি জাতের গরু লালন-পালন করে আসছেন। বর্তমান তাদের বাড়িতে ৬ থেকে ১৪টি গরু-বাছুর রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একাধিক গাভী। এসব গাভীর প্রজনন থেকে বাড়তে থাকে তাদের গরুর সংখ্যা। আসন্ন কোরবানি ঈদে গরু বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন তারা।

 

এরেন্ডাবাড়ী চরের বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, গরু পালন করেই সংসারের চাহিদা পূরণ করি। দুধ ও গরু বিক্রি করে বছরে প্রায় লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়। এটিই আমার প্রধান আয়ের উৎস।

 

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কমকর্তা ডা. মো. মাছুদার রহমান সরকার বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের গরু পালনে আগ্রহ বাড়ছে। কারণ এখানে গরুর জন্য অতিরিক্ত খাদ্য কিনতে হয় না। প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা ঘাস খেয়ে গরু বড় হয়। যার ফলে তারা লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে গরু পালন করে সুদিনের ছোঁয়া লেগেছে চরবাসীর জীবনে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version