-->

লবণাক্ত জমিতে সূর্যমুখী চাষ, স্বপ্ন বুনছেন কৃষক

খুলনা ব্যুরো
লবণাক্ত জমিতে সূর্যমুখী চাষ, স্বপ্ন বুনছেন কৃষক
ডুমুরিয়ায় লবণাক্ত পতিত জমিতে হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে

সূর্য যখন যেদিকে হেলছে, সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে হেলে পড়ছে। চারদিকে হলুদ ফুলের মন মাতানো রূপ। এমন চিত্র খুলনার ডুমুরিয়ায়।

 

লবণাক্ত পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষে সফলতা এসেছে। স্বল্প খরচে বাম্পার ফলনে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় হচ্ছে সূর্যমুখী চাষ। সবুজ গাছের ফাঁকে ফাঁকে শোভা পাচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি। চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী চাষ করে বেশি লাভের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। সূর্যমুখী ফুলের অপরূপ এ দৃশ্য দেখতে ছেলেমেয়েরা ছুটছেন উপজেলার বিভিন্ন জমিতে।

 

ডুমুরিয়ার লবণাক্ত জমিতে হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান কৃষকরা। সূর্যমুখী চাষে সফলতা দেখে অন্য কৃষকরা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছন।

 

কালিকাপুর গ্রামের সূর্যমুখী চাষী সাইফুল ইসলাম মোড়ল জানান, কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেন। অল্প সময় ও কম পরিশ্রমে ফলন ভালো ও দাম ভালো পাওয়ার আশা তার। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সূর্যমুখী ফুল থেকে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।

 

তিনি জানান, প্রতি বছর ৩৩ শতক জমিতে এ ফুল চাষ করেন। কৃষি অফিস বীজের পাশাপাশি সার কীটনাশকও সরবরাহ করে। ডুমুরিয়ায় সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলনে সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে সঙ্গে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখেও। ডুমুরিয়ায় লবণাক্ত পতিত জমিতে হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সফলতা এসেছে।

 

চাষি মোহাম্মদ জানান, তিন বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেন। ৫/৬ বছর ধরে লবণাক্ত এ জমি পড়ে থাকতো। আমন ধান ছাড়া আর কোনো ফসল এখানে হতো না। কৃষি অফিস থেকে সূর্যমুখী ফুল চাষের পরামর্শ দেয়। তারাই জমির চাষাবাদের  সার ও বীজ  দিয়েছে। এছাড়া সব সময় সহযোগিতা করেছে। যে কারণে বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে ফলন ভালো দেখে এখন আশপাশের অনেক কৃষকই সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

 

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়। চলতি মৌসুমে ডুমুরিয়া উপজেলায় ৩৩৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে।

 

আগামীতে এর চেয়ে আরো বেশি চাষ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তিনি বলেন, আমন মৌসুমে ধান লাগানোর পর জমিগুলো পড়ে থাকতো। সেসব জমিতে কৃষি প্রণোদনার সহযোগিতায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। এ চাষে ভালো ফলন দেখে এলাকার অন্য কৃষকদের মধ্যে সূর্যমুখী ফুলের চাষে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এতে অনাবাদি জমির পরিমাণ কমার পাশাপাশি পূরণ হবে তেলের চাহিদা।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version