-->

সীতাকুন্ডে গ্রাম-বাংলার শোভা ও ঐতিহ্য সোনালু ফুল

সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সীতাকুন্ডে গ্রাম-বাংলার শোভা ও ঐতিহ্য সোনালু ফুল
সীতাকুন্ডে গাছে গাছে ঝুলছে হলুদ রঙের সোনালু ফুল

সীতাকুন্ডে অলংকারের মতো গাছে গাছে ঝুলছে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে হলুদ রঙের সোনালু ফুল। দক্ষিণা হালকা বাতাসে দোল খাচ্ছে কিশোরীর কানের দুলের মতো। দূর থেকেও দৃষ্টিনন্দন গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে যেন বেরিয়েছে হলুদ ফুলের ঝর্ণা।

 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডিভাইডারে বাতাসে দোলছে সোনালু ফুলের হলুদ থোকা। দু’সড়কের মাঝখানে সারি সারি সোনালু গাছে সকালের সোনাঝরা রোদ কিংবা রোদেলা দুপুরে দৃষ্টিনন্দন ফুলের সৌন্দর্য বেড়ে যায় বহুগুণ। কেউবা আবার পড়ন্ত বিকেলে একটু বিশ্রাম কিংবা আড্ডা দিতে চলে আসে মনোমুগ্ধকর সোনালু ফুলে সজ্জিত মহাসড়কের ডিভাইডারে।

 

উপজেলার পৌরসদরের আমিরাবাদে পুকুর পাড়ে একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বাচ্চারা আনন্দের সঙ্গে নিজেদের মতো করে সোনালু ফুল নিচ্ছে খুবই আগ্রহ ও দায়িত্বের সঙ্গে। সোনালু ফুল কী করবে?

 

এমন প্রশ্নের জবাবে নওরিন নামের এক শিশু মুচকি হাসি দিয়ে জানান, আমার মেয়ে নিশার বিয়ে তাই সোনালু ফুলে ঘর সাজাবো এবং বর-কনে দু’জনকেও সাজাবো। তবে খেলার মাঝেও আতিকা, মুুুুন্তাসির মাহমুদ ইহসান, জোবায়ের মাহমুদ আরহান আর মাহিদের সোনালু ফুল নিয়ে আগ্রহ ও আনন্দের যেন শেষ নেই।

 

সোনালু এক প্রকার ফুল ও পাতা ঝরা বৃক্ষ। সোনালি রঙের ফুলের ব্যবহার থেকেই সোনালু নামে নামকরণ। সৌন্দর্যবর্ধণ ছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সোনালি রঙের ফুল বিশিষ্ট এ বৃক্ষের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।

 

এ বৃক্ষের ফল লম্বাটে, গাছের উচ্চতা ৩০-৪০ ফুট। গ্রীষ্মকালে সোনালু ফুল ফুটতে শুরু করে। ফুলে পাঁপড়ির সংখ্যা থাকে ৪/৫ টির মতো। অনেকে এ বৃক্ষের কাঠ দিয়ে ঘরের খুঁটি ও আসবাবপত্র তৈরি করে। বাকল, ফল, পাতা ও শাঁস বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।

 

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এক সময় বাড়ির সামনে, রাস্তার পাশ, পুকুর ও খালের পাড়ে কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নান্দনিক সোনালু গাছের ব্যাপক বনায়ন দেখা গেলেও বর্তমানে তা শুধুই স্মৃতি।

 

সীতাকুন্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদারুল আলম জানান, গাছ আমাদের পরম বন্ধু। মানবদেহের অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়াও বায়ু দূষণমুক্ত রাখতে গুরুত্বপূণ অবদান রাখে বৃক্ষ। আর সোনালু গাছ অক্সিজেন সরবরাহ করা ছাড়াও পরিবেশের সৌন্দর্য বর্ধন করে। বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত হওয়া এ সোনালু গাছ সংরক্ষণ ও বনায়নে রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ জানান, সোনালু বৃক্ষ বাংলাদেশের সর্বত্র সহজেই বেড়ে ওঠে। বসন্তের পরপরই এ গাছে সোনালু রঙের ফুল ফুটে সকলের মন কেড়ে নেয়। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে কলম করে ছোট গাছেই এ ফুল ফুটানো সম্ভব। নান্দনিক ফুল ছাড়াও পাতা ও ফলে রয়েছে রোগ নিরাময়ে এ বৃক্ষের বিশেষ গুরুত্ব।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version