-->
শিরোনাম

কুমিল্লায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ, মানা হচ্ছে না সরকারি নিয়মনীতি

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ, মানা হচ্ছে না সরকারি নিয়মনীতি
ঘিঞ্জি এলাকায় পরিণত হয়েছে লাকসাম পৌরশহর

বর্তমান সরকার ‘গ্রাম হবে শহর’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে দেশব্যাপী কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। অথচ চলমান অর্থবছরে লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, বরুড়া ও নবগঠিত লালমাই উপজেলায় শত শত কোটি টাকা বরাদ্দে নানামুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা হলেও বেশকিছু এলাকা এখনো অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে।

 

কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র দালান-কোঠা নির্মাণে নেই ন্যূনতম উল্লেখযোগ্য পরিকল্পনার ছোঁয়া। যে যার মতো করে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করছে। লাকসাম পৌরসভায় প্রায় ৫শ কোটি টাকার উন্নয়ন ও নাঙ্গলকোট পৌরসভায় ৩শ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে।

 

সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৫টি উপজেলা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা অনেকটা ঠুঁটো জগন্নাথ। ফলে ঘিঞ্জি এলাকায় পরিণত হচ্ছে ৫টি উপজেলা। এতে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষ। ইমারত নির্মাণ আইনও বিধিমালা লঙ্ঘন করে যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে অনেক সময় প্রতিবেশীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভবন নির্মাণের সময় নির্ধারিত জায়গা ছেড়ে না দেয়া এবং ছাদ, কার্নিশ ও সানশেট বড় করে তৈরি করায় এলাকায় যানজট ও জনচলাচলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়।

 

শহর এলাকায় যত্রতত্রে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন কিংবা স্থায়ী অবকাঠামো। অনেক স্থানে দেখা যায়, দালান তৈরির ইট, বালু, সিমেন্ট, রডসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সদর রাস্তায় লোড-আনলোড করে শ্রমিকের মাথায় তুলে সংশ্লিষ্ট স্থানে নেয়া হচ্ছে। ভ্যান গাড়ি কিংবা ছোটখাটো পিকআপ ভ্যান ওই স্থানে গড়ে ওঠা দালান কোঠা কিংবা ঘরবাড়িতে অগ্নিকান্ড, দৈব-দুর্বিপাকে দমকল বাহিনীর গাড়ি কিংবা অসুস্থ রোগীকে জরুরি হাসপাতালে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সও প্রবেশ করতে পারে না।

 

প্রযুক্তিগত দিক বিবেচনায় ইমারত ভবন নির্মাণে সর্বোচ্চ ৬০ ভাগ পানি, ৪৪ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বিদ্যমান ভবনগুলো ৭.৫ রিখটার স্কেল পর্যন্ত ভূমিকম্প সহনীয়।

 

এ বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে স্বীকৃতি লাভ করলেও জেলার দক্ষিণাঞ্চলে উপজেলাগুলোর অনেক বিল্ডিং, ভবন ও বিপণিবিতান ওইসবের ধারেকাছেও নেই।

 

এ ছাড়া এ অঞ্চলের তৈরি হওয়া ভবনগুলোতে এইচভ্যাক সার্কুলার, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং, বিশুদ্ধ বায়ুপ্রবাহ নিশ্চিতকরন, আন্ডারভেইকেল সারভেইলেন্স স্থাপন, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, এক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম নেই। ইমারত নির্মাণ আইন-১৯৫২ এর ক্ষমতা বলে বর্তমান সরকার ১৯৯৬ সালে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন করে।

 

এদিকে লাকসাম, নাঙ্গলকোট পৌর কর্তৃপক্ষের দাবি, নিজস্ব জনবল সংকটের কারণে তারা ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।

 

১৯২০ সালে সওজের সড়ক অধিগ্রহণকালে তৈরি নকশা অনুযায়ী পৌর শহরগুলোতে অভিযান চালালে গত ১০ বছরের মধ্যে নির্মিত অন্তত প্রায় শতাধিক বহুতল ভবন এবং দীর্ঘদিনের পুরোনো আরো সহস্রাধিক স্থাপনার এক ফুট থেকে ৮ ফুট নিয়ম বর্হিভূত অংশ ভেঙে ফেলার একাধিকবার উদ্যোগ নিলেও রহস্যজনক কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version